মেহেরপুরে ইয়াবার বিকল্প ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করছে মাদকসেবীরা
মেহেরপুর প্রতিনিধি ॥ মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি ও প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে মেহেরপুর জেলায় কিছুটা কোণঠাসা রয়েছে মাদক বিক্রেতারা। ফলে মাদকসেবীরা দ্বিগুণ টাকা দিয়েও পাচ্ছে না কোন মাদকদ্রব্য। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মেহেরপুর শহরের কতিপয় অসাধু ফার্মেসী মালিক এবং কিছু অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী পেন্ট্রাডল, টাফেনটা, লোপেনট্রা, সেন্ট্রাডল ও ওমোরফোনসহ ইত্যাদি ব্যথানাশক ওষুধ বিক্রি করে যাচ্ছে। আইন অনুযায়ী রেজিঃ চিকিৎসকের পরামর্শ বা অনুমতিপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও, এসব ওষুধ ব্যবসায়ীরা কোনো নিয়মনীতি ও আইনের তোয়াক্কায় করছে না। আর এসব ওষুধ দিয়েই চলছে মাদকসেবীদের মাদক সেবনের কাজ। সরকার এ ওষুধটি উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করলেও প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় শহরের বিভিন্ন ফার্মেসীতে এসকল ওষুধ বিক্রি হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মাদকসেবী জানায়, মেহেরপুর শহরের লর্ড মার্কেট এলাকায় মায়ের দোয়া ফার্মেসীর সত্বাধিকারী মিলন দীর্ঘদিন ধরেই এসব ওষুধ বিক্রি করছেন। এসব ব্যথানাশক ওষুধের মূল্য ২৫ টাকা হলেও ১৮০ থেকে ২০০ টাকা মূল্যে কিনে থাকেন। ইয়াবার বিকল্প হিসেবে ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করছে মাদকসেবীরা। প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে কৌশল অবলম্বন করে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় পরিচিত মাদকসেবীদের কাছে ওষুধ বিক্রি করেই দোকান বন্ধ করে রাখেন মিলন। সকালে ও সন্ধ্যায় পরিচিত আনুমানিক ২০-৪০ জন মাদকসেবীদের কাছে তিনি প্রতিটি টাপেন্টা ও সাথে আরও এক ধরনের ওষুধ বিক্রি করেন ১৮০-২০০ টাকা করে। দীর্ঘদিন যাবৎ এ ব্যবসা করে তিনি অনেক অর্থ কামিয়েছেন বলে জানান তারা।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ কবির জানান, এসব ওষধ ক্যান্সারের রোগীরা সেবন করে। বিভিন্ন ক্যান্সারের ব্যথায় এসব ট্যাবলেট প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। সব ব্যথানাশক ওষুধ রেজিঃপ্রাপ্ত ডাক্তারের অনুমতিপত্র ছাড়া বিক্রয় নিষেধ ।
টাপেন্টা বিক্রযয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে, মায়ের দোয়া ফার্মেসীর সত্বাধিকারী মিলন বলেন, মাঝেমধ্যে এনে বিক্রি করা হয় দু-একটা করে। ২৫ টাকার ওষুধ ১৮০-২০০ টাকায় কিভাবে বিক্রি করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এ ওষুধের সাপ্লাই নাই, কেনার উপরে দাম পড়ে। সেজন্য ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি করা হয়। প্রতিনিয়ত ওষুধ বিক্রি ও মজুত রাখা আছে জানালে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।