রোগি না দেখে ব্যবস্থাপত্র দিতে অস্বীকার করার আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক লাঞ্চিত
আলমডাঙ্গার হারদী গ্রামে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারসহ মহিলা চিকিৎসককে লাঞ্চিত করার অভিযোগে যাদবপুর গ্রামের এক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে। বাপের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থাপত্র নিতে গিয়ে ওই যুবক আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারসহ আরও এক মহিলা চিকিৎসকের সাথে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয় বলে এলাকাবাসিরা জানান।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার যাদবপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের পায়ে কাঁটা বিঁধলে তিনি বেশ অসুস্থ্ হয়ে পড়েন। হাঁটতে পারছেন না। সে কারণে আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুর রহিম (২৭) ১৬ জুলাই দুপুরের দিকে হারদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সে সময় ডিউটি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ডাক্তার আশরাফুন নাহার লীনা। আব্দুর বহিম ডিউটি অফিসার আশরাফুন নাহার লীনার নিকট গিয়ে তার বাপের অসুস্থ্যতার বিবরণ দিয়ে ব্যবস্থাপত্র দিতে বলেন। ডাক্তার আশরাফুন নাহার লীনা রোগি কোথা জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে আব্দুর রহমান জানান, তিনি অসুস্থ, চলাফেরা করতে পারছেন না। রোগি না দেখে ব্যবস্থাপত্র দিতে পারবেন না ডাক্তার আশরাফুন নাহার লীনা প্রত্যুত্তরে এ কথা বললে তাদের মধ্যে শুরু হয় বিতন্ডা। সে সময় আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মোর্তজা আরেফিন ছুটে গেলে তার সাথেও আব্দুর রহিমের তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে আব্দুর রহিম আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারকে লাঞ্চিত করেন। ডিউটি অফিসারসহ দুজন মহিলা চিকিৎসকের সাথেও হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। প্রত্যক্ষদর্শিরা আরও জানান, এক পর্যায়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফদের সহযোগিতায় আব্দুর রহমানকে আটকে রাখা হয়। তবে সুযোগ বুঝে সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এদিকে, এ ঘটনা জানতে পেরে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ আলমডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মোর্তজা আরেফিন জানান, তিনি সেসময় ইমাজেন্সি ওয়ার্ডে ডিউটি করছিলেন। গালিগালাজ শুনে ছুটে গিয়ে দেখেন, আব্দুর রহিম নামের যুবক ডাক্তার আশরাফুন নাহার লীনাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করছেন আর চিৎকার করে বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করছেন। তিনি ছুটে গিয়ে বাঁধা দিতে গেলে তাকেও লাঞ্চিত করে। এক পর্যায়ে যুবকটিকে আটকে রাখলেও সে পালিয়ের যেতে সক্ষম হয়। তিনি বলেন, শুধুমাত্র রোগি না দেখে ব্যবস্থাপত্র দিতে অস্বীকার করাতে একজন মানুষ কতটা বিশ্রি আচরণ করতে পারে তা না দেখলে বোঝা দুষ্কর।
আলমডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর জানান, আভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে। খুব শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অভিযুক্ত আব্দুর রহিমের মা জানান, আব্দুর রহিম শিক্ষিত ছেলে। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার। তার ছেলে প্রথমেই কোন মহিলার উপর হাত তুলতে পারে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। মহিলা চিকিৎসকই আগে আব্দুর রহমানের উপর হাত তুলেছেন বলে তিনি দাবি করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও চেক করলেই তার কথার সত্যতা মিলবে বলেও দাবি করেন।
এ ঘটনায় ডাক্তার আশরাফুন নাহার লীনা বাদী হয়ে রাতে আলমডাঙ্গা থানায় লিকিত এজাহার দায়ের করেছেন।