নানামুখী সমস্যার আবর্তে দেশের ২য় বৃহত্তম আলমডাঙ্গা পশুহাট
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আলমডাঙ্গা পশুহাট নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানামুখি সমস্যা। ফলে কয়েক কোটি টাকার পশুহাটটি চিরতরে হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের নিকট থেকে লীজ গ্রহণ করা পশুহাটের জমির লীজ নতুন করে নবায়ন না করার অভিযোগ তুলে তা অন্যত্র লীজ প্রাণ করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা পৌরসভা কিংবা পশুহাটটির ইজারাদার কেউই পশুহাটের অবস্থানের জমি লীজ না পাওয়ায় দেশের অন্যতম বৃহত্তম এ হাটের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, দেশের ২য় বৃহত্তম আলমডাঙ্গা পশুহাট। প্রতি বছর এ পশুহাট ইজারা দিয়ে আলমডাঙ্গা পৌরসভা কয়েক কোটি টাকা অর্জন করে। এই হাটের ইজারার টাকায় মুলত আলমডাঙ্গা পৌরসভা স্টাফের বেতন ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড হয়ে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে এ পশুহাট প্রতিষ্ঠিত। মোট ৩ একর ১৯ শতক জমি রেলওয়ে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিকট থেকে লীজ নিয়ে তার উপর পশুহাট বসে আসছে। সপ্তায় শুধু এক দিন অর্থাৎ বুধবার এ পশুহাট বসে। যদিও ২০১৩ সালে তৎকালীন আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মীর মহি উদ্দীন ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে সপ্তায় ২ দিন অর্থাৎ শনি ও বুধবার হাট বসানোর অনুমতি প্রাপ্ত হন। বর্তমানে আলমডাঙ্গা পৌরসভা কর্তৃক বাংলাদেশ রেলওয়ের নিকট থেকে লীজ নবায়ন করা হয়নি অভিযোগ তুলে অন্যত্র লীজ প্রদান করা হয়েছে। গত ৮ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী ডিইও দপ্তর মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ খর্দ আইলচারার আকবর আলীর ছেলে রবিউল ইসলামকে নতুন করে লীজ প্রদান করেছে। পূর্বের লীজ গ্রহীতা আলমডাঙ্গা পৌরসভা কিংবা পশুহাট ইজারাদার আব্দুল হান্নানকে লীজ না দেওয়াতে বর্তমান পশুহাট নিয়ে বেশ সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এমন দুরাবস্থায় আলমডাঙ্গাবাসি বৃহত্তম এ পশুহাট হারিয়ে ফেলতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বিরুদ্ধে এ লীজ প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রথমে পোড়াদহে উন্মুক্ত লীজ অনুষ্ঠান হবে জানানো হলেও পরে তা পাকশীতে হয়। আগ্রহী অনেকে পাকশীতে গেলেও আজ লীজ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে না এমন তথ্য তাদেরকে জানানো হয় বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে, লীজ গ্রহিতা খেলাপী না হওয়া সত্বেও অন্যত্র নতুন করে লীজ প্রদান করায় রেলওয়ের বিভাগীয় সংশ্লিষ্ট ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ও ফিল্ড কানুনগোসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা পৌরসভা গত ১৩ জুলাই আলমডাঙ্গা সহকারী জজ আদালতে মামলা করে। ওই মামলার প্রেক্ষিতে একই দিনে উপরোক্ত ১ ও ২ নং বিবাদীকে ৭ দিনের ভেতর কারণ দফর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, চুয়াডাঙ্গা।
বিষয়টি সহজে মীমাংসার জন্য চুয়াডাঙ্গা -১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার ও পৌর মেয়র হাসান কাদির গনুর এক্যমত্য সিদ্ধান্ত জরুরী বলে সচেতন সমাজ মনে করেন।
নেতা আর নেতৃত্বের ভুলে যেন আলমডাঙ্গাবাসির সম্পদ নষ্ট না হয়, তাদের সঠিক পদক্ষেপের অভাবে যেন আলমডাঙ্গাবাসি ভাগ্যবিড়ম্বিত না হয়, সেদিকে সযত্ন দৃষ্টি রেখে সঠিক নেতৃত্ব ও পদক্ষেপ ভীষণ জরুরী। যে কোন ধরণের ব্যক্তি স্বার্থের উর্দ্ধে উঠে সামগ্রিক স্বার্থে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে হবে। তা না হলে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম ক্ষমা করবে না। এমনটাই মনে করেন আলমডাঙ্গার সচেতন মহল।