অপহরণ মামলায় ৫২ দিন পর আটক হল আলমডাঙ্গার আলোচিত প্রেমিকজুটি ঐশী-আসিফ
৫২ দিন পর অপহরণ মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এসে আটক হল আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ার আলোচিত প্রেমিকজুটি ঐশী-আসিফ। পরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে প্রেমিকাকে বিজ্ঞ আদালত তাকে মা-বাবার জিম্মায় সোপর্দ করে। জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে প্রেমিক আসিফকে।
জানা যায়, আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ার মেয়ে এ বছর এসএসসি পাশ করেছে। মেয়েটির প্রাইভেট শিক্ষক ছিলেন সামনের বাড়ির অনার্স পড়ুয়া মেধাবী ছাত্র আসিফ মাহমুদ (২১)। প্রাইভেট পড়ানোর এক পর্যায়ে সুদর্শন ও মেধাবী শিক্ষকের সাথে সুন্দরী ছাত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠে। ক্লাসের পাঠে ছাত্রি যতটা পারদর্শীতা অর্জন করুক না করুক ব্যক্তিগত পাঠে প্রভূত পারঙ্গমতা অর্জন করে। ইতোমধ্যে মেয়েটির এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়। পরীক্ষার পর রেজাল্টও বের হয়।
ওয়াকিবহাল মহলের সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষা শেষে তারা বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এক পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গায় গিয়ে গোপনে তারা বিয়ে করে। মেয়ের পরিবার তাদের বিয়ে মেনে নেবেন না এ ভয়ে তারা পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। গত ৩০ জুন মেয়েটি আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে দুজন একত্রিত হয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়।
এ ঘটনায় গত ১০ জুলাই মেয়েটির মা বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলায় প্রেমিক প্রবর, প্রেমিকের বড় ভাই আইটি ইঞ্জিনিয়ার, মা-বাবা ও মামা-মামীকে আসামি করা হয়।
অপহরণ মামলার পর পুলিশ প্রেমিকাকে উদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে পড়ে। সর্বোচ্চ নিষ্ঠা নিয়ে প্রেমিকের বিভিন্ন আত্মীয় বাড়ি অভিযান চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে মামলার তৎকালীন কর্মকর্তা এস আই রফিক প্রেমিকের মামা সিনিয়র আইনজীবীকে দু’দফা থানায় ডেকে চাপ সৃষ্টি করেন। চুয়াডাঙ্গা বার অ্যাসোসিয়েশনের হস্তক্ষেপে আইনজীবীকে গ্রেফতার না হলেও গত ৯ জুলাই ওই আইনজীবীর বয়স্ক স্ত্রীকে বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে আসে। আটকেরর পর দিন অর্থাৎ ১০ জুলাই থানায় অপহরণ মামলা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠে। সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আইনজীবীর স্ত্রীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
পরে এস আই রফিক বদলি হলে মামলার তদন্তভার বর্তায় এসআই সুব্রত বিশ্বাসের উপর। এস আই সুব্রত বিশ্বাসের আন্তরিক প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত আদালতে হাজিরা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় প্রেমিক জুটি। পুলিশ নিশ্চিত হতে পারে যে প্রেমিকজুটি ঢাকার সাভারে প্রেমিকের ভাইয়ের বাড়ি অবস্থান করছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে বাড়ি ফিরলে পুলিশ তাদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালত তাকে মা-বাবার জিম্মায় প্রদান করেন। জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে প্রেমিক পুরুষকে।