চুয়াডাঙ্গায় পাটের চেয়ে পাটকাঠির কদর বেশি
চুয়াডাঙ্গায় পাটের চেয়ে পাটকাঠির চাহিদা বরাবরই বেশি। এবারও পাটকাঠির চাহিদা পাটের চেয়ে ও বেশি । এ জনপদে পাট কাটার ভরা মৌসুম থেকে শুরু করে সারা বছরই পাটকাঠি চড়া মূল্যে বিক্রি হয়ে থাকে। তাই পাটকাঠি এখন আর জ্বালানি নয় পান বরজের শলা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে পান চাষে লাভবান হওয়ার কারনে এ জনপদে চাষীরা প্রতি বছর নতুন নতুন পান বরজ তৈরী করে পান চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। পান চাষীরা বিপুল উৎসাহ নিয়ে জেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে নতুন পান বরজ তৈরী করছে। অনেক চাষী নিজের জমি না থাকলেও অন্যের জমি লিজ নিয়ে পান বরজ করছেন।
প্রতিবছর নানা প্রতিকুলতার ফাঁদে পড়ে পান বরজে ব্যাপক হারে ক্ষতিও হয়। সকল প্রতিকুলতা কাটিয়ে পান চাষ করে এ জনপদের অনেক চাষী আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন।
অনান্য ফসলের লাভ কম হওয়ায় এলাকায় প্রতিবছর ব্যাপক হারে নতুন নতুন পান বরজ তৈরী হচ্ছে। পান চাষে যেমন নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়, তেমনি অনেক লোকের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়।
অনেকে পান বরজকে আঁকড়ে ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বচ্ছন্দে জীবনযাপন করছেন। শীত মৌসুম শুরু হলে পান বরজের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পান চাষীরা নতুন বরজ তৈরি ও মেরামতের কাজ শুরু করে। চাষীরা আগে পান বরজে পানের লতা বেয়ে উঠার জন্যে বাঁশের শলা ব্যবহার করতো। সম্প্রতি সময়ে বরজের এই প্রধান উপকরণ বাঁশের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে বাঁশের বিকল্প হিসেবে ব্যাপক হারে পাটকাঠির ব্যবহার শুরু করেছে।
এ অঞ্চলের চাষী গৃহস্থ পরিবারগুলো পাট চাষ করে সারাবছর রান্নার কাজে পাটকাঠি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতো। তাই পাটকাঠি এখন আর জ্বালানি নয় পান বরজের শলা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
এ বিষয়ে জয়রামপুর গ্রামের পাটচাষী আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘গ্রামের লোকজন পাট কাটা শুরু করেছে। অনেকে পাট শুকানোর কাজ করছে। ইতোমধ্যে পাটকাঠি ক্রয়ের জন্যে পাটকাঠি ব্যবসায়ীরা তাগাদা দিতে শুরু করেছেন। অনেকে তাদের নিকট থেকে আগাম টাকা নিয়ে পাটকাঠি বিক্রিও করে দিয়েছে।’
পানচাষী শাহজাহান বলেন, ‘একসময় পান বরজে পানের লতা খাড়া করে রাখার জন্যে বাঁশের শলা ব্যবহার করা হতো। সম্প্রতি সময়ে বাঁশের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে বাঁশের বিকল্প হিসেবে ব্যাপকভাবে পাটকাঠির ব্যবহার শুরু হয়েছে।’
পাটকাঠি ব্যবসায়ী আলমডাঙ্গার মজিদ বলেন, ‘সারাবছর পাটচাষীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাটকাঠি কিনে এলাকার বিভিন্ন হাটবাজারে নতুন নতুন বরজ মালিকদের কাছে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে এলাকার পান বরজে বাঁশের শলার পরিবর্তে পাটকাঠির শলা ব্যবহার হওয়ার কারনে পাটকাঠির কদর বেড়ে গেছে।