এক কলেজ পড়ুয়া যুবক সাইবার অপরাধে আটক
এক কলেজ পড়ুয়া এক সাইবার অপরাধীকে আটক করেছে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। অভিযুক্ত ওই কিশোরের নাম তুহিন রেজা। সে আলমডাঙ্গার কেদারনগর গ্রামের শুকলালের ছেলে ও হারদী এম এস জোহা কলেজের ছাত্র।
তুহিন রেজা ফেসবুকে মেয়ে সেজে ফেক আইডি খুলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া বিভিন্ন মেয়ের উদ্দেশ্যে আকর্ষণীয় বেতন অফার করে তার ক্লাস ফাইভে পড়া ছোট ভাইকে পড়ানোর প্রস্তাব দিত। প্রস্তাবে কেউ সম্মতি দিলে ছোট ভাইয়ের পরিবর্তে সে নিজেই পড়তে চলে যেতো। এমন পরিস্থিতিতে মেয়েটি তাকে পড়াতে অসম্মত হলেও তুহিন রেজা বারবার ওই মেয়ের বাড়িতে যেত।
এভাবে কমপক্ষে ৫ মেয়ের সাথে সে যোগাযোগ করতে পেরেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সে তাদেরকে কুপ্রস্তাব দিত। করতো উত্যক্ত। এই মাধ্যম থেকে সে মেয়েদের ছবি নিয়ে এডিট করে বিভিন্ন গ্রুপে দেয়ারও অভিযোগ তুলেছে প্রতারিত মেয়েরা।
এমন অভিযোগ তুলে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৪ মে) পুলিশ তাকে আটক করে।
অভিযোগকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েটি জানান, "আলমডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন মেয়েকে বিভিন্ন সময় ফিমেল ফেইক আইডি ব্যবহার করে বাসায় প্রাইভেট পড়তে চাওয়া (মেয়ে সেজে ক্লাস ফাইভের ছোট ভাইকে প্রাইভেট পড়াবো এমন ধরনের অফার করে মেয়েদের বাসায় যাওয়া),পারমিশন ছাড়া মেয়েদের ছবি এডিট করে আপলোড করা,মেসেঞ্জারে বাজে গ্রুপে অ্যাড করে হ্যারাজ করা এই ছেলেটির (তুহিন রেজা) বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় সাধারণ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আমাকে অনেকে বুঝিয়েছে, কলেজে পড়া ছেলে,ভুল করেছে ছেড়ে দেয়া উচিত।আমার মনে হয়েছে,এই উঠতি বয়সেই ভুল শুধরে দেয়া উচিত।এটা কোনো বড় অপরাধের সূত্রপাত হতে পারতো।
যদিও আমি এর আগে বেশ কয়েকবার ছেলেটিকে ওয়ার্নিং দিয়েছি লিগ্যাল স্টেপ নিবো বলে,ছেলেটি তার অপকর্মগুলো বন্ধ করেনি। শুধু আমার সাথেই না, অনেক মেয়ের সাথেই সে এই অপরাধ করেছে। শুধু আলমডাঙ্গার ৫ টা মেয়ের কথা পুলিশের নিকট স্বীকার করেছে। যারা আমার অভিযোগের স্বাক্ষী।
আপুরা অনেকে বাসায় টিউশনি করান।তাদেরকে টিউশনি নেয়ার আগে সাবধান হতে অনুরোধ করবো।জীবনের বিচিত্রতার সাথে সাথে মানুষের প্রতারণা করার ধরণেও বিচিত্রতা এসেছে।"
ইংরেজিতে "তামান্না আক্তার" ও "তামান্না তাহিয়া" এই ফেক আইডি ব্যবহার করে অপকর্ম করতো বলে জানা গেছে।
তবে, বিকেলে অভিযোগকারিনী নিজেই থানায় গিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়।
সেকারণে " ভবিষ্যতে এমন অপরাধ আর করবে না" মর্মে লিখিত মুচলেকায় স্বাক্ষর নিয়ে অভিভাবকের হাতে পুলিশ অভিযুক্তকে তুলে দেয় বলে জানা গেছে।
তুহিন রেজার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সে আলমডাঙ্গার ৫ মেয়ের সাথে এমন করেছে স্বীকার করে জানায়, ভবিষ্যতে আর এসব করবে না। ফেক আইডি দুটো আগেই ডিলিট করে দিয়েছে। নতুন করে তুহিন রেজা নামের আইডি খুলেছে। এটাই তার একমাত্র আইডি।"
এব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ গনি মিয়ার কাছে জানতে একাধিকবার মোবাইলে রিং করলেও তিনি তা ধরেননি।