১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও আলমডাঙ্গার রিপন ফার্মেসীর মালিক সুজা উদ্দিন

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
নভেম্বর ১৭, ২০২৩
177
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

বিভিন্ন এনজিও, ঔষধ কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে স্বপরিবারে রাতের আধারে উধাও আলমডাঙ্গার রিপন ফার্মেসীর মালিক সুজাউদ্দিন। গত মঙ্গলবার দিনগত গভার রাতে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে পালিয়ে যান তিনি । পরদিন বুধবারে কেউ টের না পেলেও গতকাল বৃহস্পতিবার পাওনাদাররা একে একে দোকানের সামনে এসে ভীড় করেন। সেই সাথে সুজাউদ্দিনের রিপন ফার্মেসীতে একাধিক তালা মারেন পাওনাদাররা। এরপরই বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা টক অব দা টাউনে পরিনত হয়।


জানা গেছে, যশোর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড খোড়কি গ্রামের মৃত আছির আলীর ছেলে সুজাউদ্দিন আলমডাঙ্গার বাদেমাজু গ্রামের আব্দুল মান্নান ওরফে জাফরান খলিফার মেয়ে মামতো বোন মিনা খাতুনকে বিয়ে করেন প্রায় কুড়ি বছর আগে। গত ১৭ সালের দিকে অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে যশোরে বসবাস করা সুজাউদ্দিনের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। যশোরে টিকতে না পেরে তিনি বউ-বাচ্চা নিয়ে আলমডাঙ্গার বাদেমাজু গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে চলে আসেন। শহরের হাইরোডে মেডিসিন কর্নারে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস শুরু করেন তিনি। মেডিসিন কর্নারে দেড় বছর চাকরী করেন সুজাউদ্দিন। এরপর তার শ্বশুর চাকরী থেকে অবসরে যান। পেনশনের টাকা নিয়ে হাইরোডে রিপন ফার্মেসী নামে একটি ঔষধের দোকান দেন তিনি।


ব্যবসায়ী প্রতিবেশীরা জানান,সুজাউদ্দিনের ব্যবসা ভালই চলছিল। তিনি বিভিন্ন এনজিও ও ডেইলি সমিতি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসার পুঁজি গড়ে তোলেন। বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানিও তাকে লক্ষ লক্ষ টাকার ঔষধ বাকিতে দিতে থাকেন। প্রতিবেশী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও তিনি টাকা ঋণ নেন।


সুজাউদ্দিন রাতের আঁধারে স্বপরিবারে পালিয়ে যাওয়ার পর জানা যায়, বিভিন্ন এনজিও, ডেইলি সমিতি, বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি, প্রতিবেশী ব্যবসায়ী ও পরিচিত জনদের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছেন।


জানা গেছে, ঔষধ কোম্পানি ইবনে সিনা ল্যাবরেটরিজের ৭ লক্ষ টাকা, জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালসের ৫ লক্ষ ৯০ হাজার, একমি ল্যাবরেটরিজের ১ লক্ষ, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ৯০ হাজার, বায়োফার্মা লিমিটেডের ১ লাখ ১৪ হাজার, নিপ্রো জেএমআইয়ের ৫০ হাজার, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসের ১ লাখ ১০ হাজার টাকা।


এছাড়া সুজাউদ্দিন এনজিও ব্রাক থেকে ঋণ নেন ৭ লাখ টাকা। একতা ডেইলি সমিতি থেকে বাড়ির দলিল রেখে ২৭ লাখ টাকা ও ফোরস্টার সমিতি থেকে ৭ লাখ টাকা ঋণ নেন।


এছাড়া সুজাউদ্দিন প্রতিবেশী ব্যবসায়ী আলমিরা কসমেটিক এন্ড কনফেশনারীর মালিক জহুরুল ইসলামের কাছ থেকে ৪ লাখ, ভাই ভাই মোবাইলের মালিক জুয়েল রানার কাছ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার, আমেনা কনফেশনারীর মালিক ডাবলুর কাছ থেকে ৫০ হাজার ধার নেন।
এছাড়াও লোকলজ্জা ভয়ে অনেক পাওনাদার ব্যবসায়ীরা মুখ খুলছেন না বলেও জানা গেছে।


প্রতারক সুজাউদ্দিন স্বপরিবারে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সবচেয়ে বেশী বিপদে পড়েছেন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। তারা উপায়ান্তর না পেয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিরা আলমডাঙ্গা থানায় সুজাউদ্দিনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram