বেতনের চেয়ে বেশি গাড়ি ভাড়া দেন আলমডাঙ্গার সাব-রেজিস্টার
আলমডাঙ্গা সাব রেজিস্টার নূরে তোজাম্মেল হোসেন নবম গ্রেডে সাকুল্যে বেতন পান ৩৭ হাজার। অথচ, অফিসে যাতায়াত বাবদ মাইক্রোবাস ভাড়া দেন ৪৮ হাজার টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা সাব রেজিস্টার নূরে তোজ্জামেল হোসেন। তিনি আইন ও বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন নিবন্ধন অধিদফতরের অধীনে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর নবম গ্রেডে বেতন পান। তিনি সাকুল্যে বেতন উত্তোলন করেন প্রায় ৩৭ হাজার টাকা। তিনি সপ্তাহে ৪ দিন অর্থাৎ রবি, সোম, মঙ্গল ও বুধবার অফিসে আসেন বাকী দিনে দামুড়হুদা উপজেলা সাব রেজিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন। আলমডাঙ্গা উপজেলা সাব রেজিস্টার হিসেবে কর্মরত থাকলেও তিনি চুয়াডাঙ্গা শহরে বাড়িভাড়া করে অবস্থান করেন। অফিস ডে -তে নোহা মাইক্রোবাস যোগে ( ঢাকা মেট্টো -গ- ১৪-৬২৯৩) চুয়াডাঙ্গা থেকে আলমডাঙ্গা অফিসে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন মাইক্রোবাস ভাড়া দিতে হয় তিন হাজার টাকা। মাসে ১৬ দিন যাতায়াত বাবদ ৪৮ হাজার টাকা গুণতে হয়।
একাধিক দলিল লেখকসূত্রে জানা যায়, সাব রেজিস্টার নূরে মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
ওয়ারেশসূত্রে প্রাপ্য জমি বিক্রির দলিল রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে খতিয়ান প্রতি ৪ হাজার টাকা করে উৎকোচ নেন তিনি। ক্রেতা উপস্থিত না থাকলে কিংবা বিদেশে অবস্থান করলে দলিল প্রতি নেন ১ হাজার টাকা করে, ডিসিআর না থাকলে দলিল প্রতি ৪ হাজার টাকা, বেলা ৩ টার পর দলিল রেজিস্ট্রি করতে দলিল প্রতি ৫ শ থেকে ২ হাজার টাকা অতিরিক্ত উৎকোচ নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দলিলের নকল উঠাতে সরকারি ফির ৩ গুণের অধিক অর্থ নেন এমন অভিযোগও রয়েছে। এমনকি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এমন কারণ দেখিয়ে তিনি হায়ার ভ্যালু নামের উৎকোচের অংক বাড়িয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ সব অনিয়মের তথ্য দিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দলিল লেখকরা জানান, ইতোপূর্বে এক দলিল লেখক সাংবাদিকদের তথ্য দিয়েছিলেন এমন অভিযোগ তুলে বেশ কয়েক মাস তার কোন দলিল সাব রেজিস্টার রেজিস্ট্রি করেন নি। বড় অসহায় জীবনযাপন করেছিলেন সেই দলিল লেখক।
সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছেন, সম্প্রতি ডিসি আর না থাকলে দলিল রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে সাব রেজিস্টার ৫ হাজার করে দলিল প্রতি টাকা নিতেন। এই নিয়ে দলিল লেখকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। এ বিষয়ে তাদের সাব রেজিস্টারের সাথে এক মিটিং হয়। দলিল লেখকরা দলিল প্রতি সাড়ে তিন হাজার করে নিতে খিব অনিনয় বিনয় করলেও মন গলেনি সাব রেজিস্টারের। তিনি ৪ হাজার টাকা করে উৎকোচ পুণর্নিধারণ করেন। ( অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে এ মিটিং এর অডিও রেকর্ড সরবরাহ করা হয়েছে)।
সাব রেজিস্টার নূরে তুজাম্মেল হোসেন এ ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। আগামীকাল সকালে অফিসে গিয়ে দেখা করতে বলেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা রেজিস্টার আব্দুল মোতালেব বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোন বক্তব্য নেই।