ঢাকার স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ) আহসান হাবীব শাহীনের লাশ আলমডাঙ্গা দাফন
ঢাকার স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ) আহসান হাবীব শাহীন মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাবীব শাহীন আলমডাঙ্গার বাবুপাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে। মাত্র ৪০ বছর বয়সে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বড়ভাই ফজলুল হক শামীম আলমডাঙ্গার এরশাদপুর একাডেমির প্রধান শিক্ষক। ছোট ভাই দেশের একটি নামীদামি কোম্পানির সিনিয়র অফিসার। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ছোট্ট দুটি শিশু পুত্র, বাবা-মা, ভাইসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাবীবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।
পৃথক শোক বার্তায় আইনমন্ত্রী ও সচিব মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
জানা গেছে, মরহুম আহসান হাবীব শাহীন স্যালিভারি গ্রান্ড ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তিনি সর্বশেষ ২২ আগস্ট স্ট্রোকজনিত কারণে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বিচারক আহসান হাবীব বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের ৪র্থ ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সহকারী জজ হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি ময়মনসিংহে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, যশোরে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার এবং সর্বশেষ ঢাকায় স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (পল্লী বিদ্যুৎ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আহসান হাবীব রাজশাহী বিশ্ববিদালয়ের এলএলবি (অনার্স) ২০০০-০১ সেশনস (২৪ ব্যাচ)-এর শিক্ষার্থী ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে আহসান হাবীব শাহীন ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। শাহীনের শরীরে ভয়াবহ ক্যান্সারের অস্তিত্ব প্রথমে সেখানেই ধরা পড়ে। চেন্নাই থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি কিছুটা সুস্থ হলে দেশে ফিরে আবার বিচারিক কাজে যোগ দেন। এরপর চিকিৎসা নিতে তিনি সিঙ্গাপুরেও যান।
সেখান থেকে ফিরে এসে আবারও বিচারিক কাজে যোগ দেন। এরমধ্যে গত ২২ আগস্ট তিনি হঠাৎ স্ট্রোক করলে তাকে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল তিনি মারা যান।
ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনের মৃত্যু খবর আলমডাঙ্গায় পৌছালে শহরজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। শহরের বাবুপাড়ার পরিবারে শোকের মাতম ওঠে। বন্ধু, শুভাকাঙ্কী, আত্মীয় পরিজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শোকবার্তা জানিয়ে পোস্ট দিতে থাকেন। শুভাকাঙ্ক্ষীরা তার শোকাহত বাবা-মাকে শান্তনা দিতে বাবুপাড়ার বাড়িতে ছুটে যান। রবিবার সকাল ১০ টায় আলমডাঙ্গা দারুস সালাম ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে শাহীনের লাশ দাফন করা হয়েছে।