আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া বাজারের মুদি দোকান কর্মচারী মোস্তফার ৩ দিনেও সন্ধান মেলেনি
নিখোঁজের ৩দিন পার হলেও বাড়ি ফেরেনি আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া বাজারের মুদি দোকান কর্মচারী মোস্তফা হোসেন। ১৪ আগস্ট সোমবার রাত ৯টার সময় হাটবোয়ালিয়া বাজারের জননী ষ্টোরের কর্মচারী বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। ৩ দিন ধরে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারে লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। হাটবোয়ালিয়া মাথাভাঙ্গা নদীর নির্মানাধীন ব্রিজের নিকট থেকে ওই কর্মচারীর মোবাইল ও বাইসাইকেল পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
নিখোঁজ হাটবোয়ালিয়া বাজারের জননী ষ্টোরের কর্মচারী মোস্তফা হোসেন(৩০) হারদী মোড়ভাঙ্গা গ্রামের মৃত হবিবার রহমানের ছেলে। মোস্তফা হোসেনের ১০ মাসের একটি সন্তান রয়েছে।
জানাগেছে, উপজেলার হাটবোয়ালিয়া বাজারের জননী ষ্টোরের মালিক জাহাঙ্গীরের মুদি দোকানে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে মোস্তফা ও তার ভাই রাকিব কাজ করে আসছিল। কয়েকমাস আগে রাকিব মুদি দোকানের কাজ ছেড়ে দিলেও মোস্তফা নিয়মিত কাজ করে আসছিল। গত ১৪ আগস্ট রাত বাড়িতে না ফিরলে তার মা দোকান মালিক জাহাঙ্গীরের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মোস্তফা বাড়িতে আসেনি সে কি দোকানে আছে জিজ্ঞাসা করে। এরপর রাতেই মোস্তফার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি হাটবোয়ালিয়া মাথাভাঙ্গার নদীর উপর নির্মানাধীন ব্রিজের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরদিন ১৫ আগস্ট তার বাইসাইকেলটি নদীর ধারে পরিত্যক্ত অবস্থায় পেয়ে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে জমা দিয়েছে এলাকাবাসি।
মোস্তফা হোসেনের স্ত্রী ১০ মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে কান্না কন্ঠে বলেন, আমার স্বামীকে ফেরত এনে দেন। আমার সন্তান এতিম হয়ে যাবে।
নিখোঁজ মোস্তফার মায়ের বলেন, আমার ছেলে হারিয়েছে ৩ দিন পার হয়ে গেল। একবারের জন্যও দোকান মালিক জাহাঙ্গীর আমাদের বাড়িতে আসেনি। সে তার ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত আছে।
মোড়ভাঙ্গা গ্রামের অনেকে জানান, মোস্তফা সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সে হাটবোয়ালিয়া বাজারের জাহাঙ্গীরের দোকানে কাজ করছে। মোস্তফার নিকট দোকান মালিক জাহাঙ্গীর টাকা পাবে আমরা কেউ জানি না। এত টাকা পাবে সে কোন দিন কাউকে বলেনি। নিখোঁজ হওয়ার সাথে সাথে দোকান মালিক টাকার দাবি করছে।
নিখোঁজ মোস্তফার বড় ভাই জানায়, তার ছোট ভাই রাতে বাড়িতে না আসছে মা দোকান মালিককে কল দেয়। দোকান মালিক জানায় মোস্তফা বাড়িতে চলে গেছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ও সাইকেল নদীর কিনারা থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে জমা দেওয়া হয়েছে। আমার ভাইকে আমরা খুজে পাচ্ছি না। আমার ভাইয়ের নিকট দোকান মালিক জাহাঙ্গীর বেশ কিছু টাকাও পাবে বলছে। এদিকে দোকান মালিক আমার ও আমার ভাইয়ের নামে থানায় টাকা পাবে বলে অভিযোগ করেছে। আমার ভাইকে ফেরত দিলে আমরা প্রয়োজনে বাড়ির ভিটা বিক্রয় করে তার টাকা পরিষদ করবো।
এবিষয়ে দোকান মালিক জাহাঙ্গীর জানান, মোস্তফা আমার দোকান থেকে রাত ৯টার দিকে বাড়ি যাওয়ার জন্য সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যায়। রাত ১১টার দিকে মোস্তফার মা আমাকে ফোন করে জানায় সে এখনো বাড়ি ফেরেনি। তারপর আমি সিসি ক্যামেরা চেক করি। দেখি মোস্তফা সাইকেল নিয়ে ব্রিজ পার হচ্ছে। রাতেই তার মোবাইলে কল দিতে দেখা যায় নির্মানাধীন ব্রিজের পাশে মোবাইল পড়ে আছে। পরদিন বিকালে সাইকেলটিও পাওয়া গেছে। তার নাামে কেন অভিযোগ করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, রাকিব ও মোস্তফা দুই ভাই আমার দোকানে কাজ করতো। তারা বিভিন্ন সময়ে আমার নিকট থেকে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ধার হিসেবে নিয়েছে। আমার টাকা না দিয়ে তারা এ নাটক করছে। মোস্তফা আত্মগোপন করে আছে। যাতে আমার টাকা দিতে না হয়।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব নাথ জানান, মোস্তফাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে ভাই তার থানায় একটি জিডি করেছে। তাকে পুলিশ সম্ভাব্যস্থানে খোঁজ করার চেষ্টা করছে। আসলে সে আত্মগোপন করে আছে কি না।