আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নে মাদকের হাট
আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে মাদকের হাট নামে পরিচিত। প্রতিনিয়ত এই ইউনিয়নে বিভিন্ন রকম মাদকে হাট বসে। আর এসব চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের প্রকাশ্য অবাধ বিচরণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছিলেন না। তবে এক সপ্তাহ ধরে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও ইউপি চেয়ারম্যান 'মাদক ব্যবসা' নিয়ে একে-অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করায় বিষয়টি দৃশ্যমান হয়ে পড়েছে।
জেহালা ইউনিয়নজুড়ে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসার ঘটনায় পুলিশ কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করলেও অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের গড়গড়ি,গড়চাপড়া, বড়পুটিমারী, ছোটপুটিমারি জেহালা বাজার সংলগ্ন একাধিক গ্রামে অবাধে মাদক ব্যবসা চলে আসছে। এসব গ্রাম মাদকসেবীদের নিরাপদ স্থান হওয়ায় নির্বিঘ্নে তারা প্রতিদিন বিকেল থেকে মধ্যরাত অবধি গ্রামের সড়কে ইয়াবা, সাদা ইয়াবা, ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, গাঁজা ও হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন করে আসছে। তবে রাত বাড়তে থাকলে জেহালার এসব গ্রাম মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানায়, ইউনিয়নের গড়গড়ি গোবিন্দপুর গ্রামের আত্তাব মীরের ছেলে জামাল সাধু, মানিক ঘোষ, সন্টুর ছেলে রিয়ন, পূর্বপাড়ার বাবর আলীর ছেলে শিপন, পালপাড়ার গোলাম খাঁর ছেলে হাসান, মসজিদপাড়ার বাক্কা সর্দ্দারের ছেলে হারুন সর্দ্দার, ভটো, তার সহযোগী মৃত তেলা মিস্ত্রীর ছেলে শাহিন, সাবেক মেম্বার প্রার্থী পূর্বপাড়ার আরিফ, মৃত ভিখু মন্ডলের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য লুলু, পুটিমারি গ্রামের শামীম, বড়পুটিমারী গ্রামের বকুল, বড়পুটিমারী গ্রামের আবু ছদ্দিনের ছেলে ডিস ব্যবসায়ী আক্তারুল, সাইদুল ইসলাম, ছোটপুটিমারি গ্রামের সাব্বির, জেহালার পশুহাট এলাকার মদ বিক্রেতা আরতি, পূন্নী, হরি, রবিন, গড়গড়ি পূর্বপাড়ার সাইদুর রহমান, জেহালা পুলপাড়ার কুটোর ছেলে স্বজল, রোয়াকুলি গ্রামের মাহবুব বিডিআর, মাদারহুদা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রাসেল, কেরামত আলীর ছেলে সাগর, আশাদুলের ছেলে ইমরান প্রকাশ্যে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি করছে। যেকারনে জেহালা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম মাদকের হাট নামে পরিচিতি পেয়েছে। ওইসব এলাকার বেশ কিছু চায়ের দোকান মাদক ব্যবসায়ীরা অবস্থান নিয়ে তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
এলাকাবাসী আরো জানায়, মাদক ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে কাউকে নিষেধ করলে নিজেরাই বিপদে পড়তে হয়। হুমকিসহ হামলা-মামলারও শিকার হতে হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে গুটি কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও পূণরায় তারা জামিনে বেরিয়ে আবারো এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী একাধিক গ্রামবাসী বলেন, এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গোপনে বিভিন্ন দপ্তরে বলা হলেও অজ্ঞাত কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।
জেহালা ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান জানান, মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা একজোট হয়েছে। তারা আমার বিরুদ্ধেই সংবাদ সম্মেলন করেছে। তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, জেহালা ইউনিয়ন থেকে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীক আটক করা হয়েছে। মাদক অভিযান অব্যহত রয়েছে।