জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের দুই কন্যা তমা ও এশা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ -২০২৩ প্রতিযোগিতায় আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের দুই শিক্ষার্থী তমা রাণী বিশ্বাস ও মাইশা আশরাফী এশা সারা দেশে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে জেলার মুখ উজ্জ্বল করেছে। তমা রাণী বিশ্বাস হামদ- নাত ও মাইশা আশরাফী এশা তাৎক্ষণিক একক অভিনয়ে সারা দেশে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। গত ৫ জুন ঢাকায় এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের শিক্ষার্থী তমা রাণী বিশ্বাস। আলমডাঙ্গা শহরের কাছারীপাড়ার বাসিন্দা জগবন্ধু বিশ্বাস ও চম্পা রাণী বিশ্বাসের মেয়ে তমা বিশ্বাস। সুশ্রী-সুশীলা তমা বিশ্বাস আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্রী। ইতোপূর্বে নানা জাতীয় প্রতিযোগীতায় সারা দেশে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে তমা চুয়াডাঙ্গার জন্য স্বর্ণপদক ছিনিয়ে নিয়ে আসেছে। ২০১৬ সালে জাতীয় শিশু প্রতিযোগীতায় ধারাবাহিক শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা লাভের পর তাকে স্বর্ণপদক অর্পণ করা হয়। ওই বছর ২৬ মে ঢাকাস্থ ন্যাম ভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে হামদ ও নাথে তমা বিশ্বাস ১ম স্থান অর্জনের গৌরব ছিনিয়ে আনে। এ গৌরবের স্বীকৃতিস্বরুপ ২৯ মে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে স্বর্ণপদক লাভ করে। ঢাকাস্থ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক জমকালো অনুষ্ঠানে সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যাড. আব্দুল হামিদ তমার হাতে স্বর্ণপদক, সনদপত্র ও নগদ অর্থের চেক তুলে দেন।
একই বছর জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও পল্লীগীতিতে সারা দেশে ১ম হয়ে স্বর্ণপদক জয় করেছিল তমা। উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ধারাবাহিক অনন্য সাফল্যের স্বর্ণালি আশিস মঙ্গে নিয়েই সে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশসেবার খেতাব ছিনিয়ে এনেছিলো।
একই বছর পর পর দুটি প্রতিযোগিতায় দেশ সেরা হয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করায় শিক্ষকরা তাকে আদর করে স্বর্ণকৃমারী নামে ডাকতে শুরু করেন। শুধু সঙ্গীত সাধনায় অনন্য সাফল্য অর্জনেই থেমে নেই তমা বিশ্বাস। আবৃত্তি, অভিনয় ও উপস্থাপনায়ও স্বভাবজাত মেধার স্বাক্ষর রেখেছে সে। চ্যানেল আই আয়োজিত মার্চ অলরাউন্ডার প্রতিযোগীতায় চমকপ্রমদ সাফল্য তাকে সেই স্কীকৃতি প্রদান করেছে।
অন্যদিকে, মাইশা আশরাফী এশা আলমডাঙ্গার সহকারী অধ্যাপক হারুন অর রশিদের কন্যা। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ প্রতিযোগিতা ছাড়াও৷ সে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। এশাও আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।
আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের সভাপতি ইকবাল হোসেন এবং সম্পাদক রেবা রানী সাহার তত্বাবধানে নৃত্যের উস্তাদ সেলিম হোসেন, যন্ত্রসঙ্গীতের উস্তাদ সুশীল কুমার কর্মকার, তুষার মিয়ার নিকট নিয়মিত সাধনা করছে তমা রাণী বিশ্বাস ও মাইশা আশরাফী এশা।
তমা বিশ্বাস শুধু সাংস্কৃতিক জগতেই আলোকদ্যুতি ছড়ায়নি, পাশাপাশি অ্যাকাডেমিক শিক্ষায়ও বেশ উজ্জ্বল ফলাফল করে চলেছে।
এ দুই কন্যা এখন আপন মেধার দ্যুতি ছড়াতে চায় দেশব্যাপী। দেশীয় সঙ্গীত সাংস্কৃতি দিয়ে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সকল বাংলা ভাষাভাষির মানুষের মন জয় করতে চায়। হতে চাই কালোত্তীর্ণ শিল্পী। রাজধানী ঢাকাতে একটা প্লাটফর্ম চায়। ঢাকাস্থ চুয়াডাঙ্গা জেলা সমিতি, কিংবা কোনো সংগঠন বা সামর্থবান ভ্যক্তি যদি সে প্লাটফর্ম সৃষ্টিতে সহযোগীতার হাত বাড়ান, তাহলে এদের। মত অনেকের প্রতিভার স্ফুরণ বাঁধাহীন ও অনেক বেশি সহজসাধ্য হয়ে উঠবে-এমন তমা ও এশার।
আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্র সাংস্কৃতিক অঙ্গনে স্থান করে নিয়েছে। প্রতি বছর জাতীয় প্রতিযোগীতায় ধারাবাহিক সাফল্যের ফলে আজ দেশব্যাপী কলাকেন্দ্রের নাম পরিচিতি। আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্র ১৯৯০ সাল থেকে খুলনা বিভাগে শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। সারা দেশে একক সংগঠনের সাফল্যের বিচারে আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের অবস্থান শীর্ষে। বিনা পারিশ্রমিকে শক্ত করে এ সংগঠনের হাল ধরে আছেন সংগঠনের সভাপতি ইকবাল হোসেন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক রেবা রাণী সাহা।