আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে পেটানোর ঘটনায় শহরজুড়ে নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড়
আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানকে মারধর করার অভিযোগে জেলা কৃষকলীগের নেত্রী সামসাদ রানু রাঙা ভাবির বিরুদ্ধে। স্কুলে দেরি করে আসায় ক্ষুব্ধ নেত্রী প্রধান শিক্ষককে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অফিস কক্ষের ভেতরে নিয়ে প্রথমে চড়থাপ্পড় ও পরে প্রধান শিক্ষককে পায়ের স্যান্ডেল খুলে পেটান বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। ৭ জুন বুধবার সকাল ১০ টায় স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াছ হোসেনের সামনেই ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় লাঞ্চিত শিক্ষকের থানায় লিখিত এজাহারের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
কৃষকলীগের নেত্রী সামসাদ রানু ওরফে রাঙ্গাভাবি আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর। পরবর্তীতে মেয়র পদে নির্বাচন করে তিনি জামানত হারান। তিনি এলাকায় রাঙাভাবি নামে অধিক পরিচিত।
স্কুলের একাধিকসূত্রে জানা গেছে, সামসাদ রানুর ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ছেলের পড়াশোনা সংক্রান্ত কাজে তিনি সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে স্কুলে ঢুকে দেখতে পান প্রধান শিক্ষক উপস্থিত হননি। প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান স্কুলে প্রবেশ করেন ৯ টা ৫০ মিনিটে। এতে ক্ষুব্ধ রাঙাভাবি প্রধান শিক্ষককে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অফিস কক্ষের ভেতরে নিয়ে যান। প্রধান শিক্ষক চেয়ারে বসলে দু'জনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় উত্তেজিত রাঙা ভাবি প্রথমে প্রধান শিক্ষকের মুখে একের পর এক চড় মারতে থাকেন পরে পায়ের স্যান্ডেল খুলে মারতে থাকেন। এরপর পরই তিনি স্কুল ছেড়ে চলে যান এবং তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে রাখেন।
এ বিষয়ে লাঞ্চিত শিক্ষক বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেন। এজাহার দায়েরের পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াছ হোসেন বলেন, "আমি অফিসের ভেতরেই ছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই স্যারকে মারধর শুরু করা হয়।"
প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান বলেন, "যা ঘটেছে তা অত্যন্ত অপমানকর। আমি হতবিহ্বল হয়ে পড়েছি। স্কুলের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার আমাকে ডেকেছেন। তার সাথে পরামর্শ করে আইনগত সিদ্ধান্ত নেব।"
বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নুর বলেন," সামসাদ রানু নামের মহিলা প্রধান শিক্ষকের সাথে যেটা করেছেন তা ফৌজদারি অপরাধ এবং নিন্দনীয়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এদিকে, এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আলমডাঙ্গা শহরে নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। দাবি উঠেছে এ ঘটনায় রাঙ্গাভাবির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। রাজনীতির সাথে সামান্য যোগসূত্র থাকলেই একজন শিক্ষককে এত ন্যাক্কারজনকভাবে লাঞ্চিত করার সাহস দেখানোর সংস্কৃতি বন্ধের দাবি জানানো হয়। আলমডাঙ্গার শিক্ষকসমাজও এ ঘটনায় অনুরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।