ঝিনাইদহে সরকারী আইন অমান্য করে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ সরকারী আইন অমান্য করে ঝিনাইদহ গোটা জেলা জুড়েই বিভিন্ন হাটবাজারে লাইসেন্স বিহীন অরক্ষিতভাবে অবাধে চলছে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা।
মান নির্ণয় ছাড়াই এসব সিলিন্ডার গ্রামীণ জনপদের মানুষ ব্যবহার করছে। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই শৈলকুপা উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে ও ১টি পৌরসভার প্রায় সব হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার।শুধু ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির ব্যবসা চালানো হচ্ছে।
এসব গ্যাস সিলিন্ডার থেকে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শৈলকুপা উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ, শিতালী, ধাওড়া, নাগিরাট, হাটফাজিলপুর, শেখপাড়া. চরিয়ারবিল, ভাটই. রয়েড়া, খুলুমবাড়িয়া, কাতলাগাড়ি, গাড়াগন্জ,কচুয়া বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারের, মুদি দোকান, ফার্নিচারের দোকান, ফটোকপির দোকান, এমনকি ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
কিন্তু এসব দোকানে নেই কোনো আগুন নির্বাপক যন্ত্র। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে নেই প্রতিকারের ব্যবস্থা। জনবহুল কিংবা আবাসিক এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্যবসার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে প্রতিনিয়ত।জ্বালানি অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী, যেসব প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস বিক্রি করবে, তাদের বিক্রির স্থান সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রেখে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে হবে।
গ্যাস বিক্রির স্থানে কমপক্ষে পাকা ফ্লোরসহ আধপাকা ঘর, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার, মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। এ ছাড়া থাকতে হবে জ্বালানি অধিদপ্তরের অনুমোদন। এদিকে বর্তমান সময়ে শৈলকুপা উপজেলায় সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে একশ্রেণির ব্যবসায়ী সিলিন্ডার নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী যেখানে সেখানে গ্যাস সিলিন্ডার ফেলে রেখে ব্যবসা করছে।
হাতেগোনা দু-একজন ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য কারও নেই সুরক্ষা ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে লাঙ্গলবাঁধ বাজারের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী সঞ্জয় কুমার কুন্ডু জানান,বৈধ কাগজপত্র ছাড়া এই ব্যবসা করার নিয়ম নেই। অথচ একশ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা অন্য ব্যবসার পাশাপাশি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা করায় এই ব্যবসা করার যাদের অনুমতি আছে তারা ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে।
ধাওড়া বাজারের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী সাহাঙ্গির হোসেন জানান ,বর্তমানে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস ৭৫০ টাকা ,ওমেরা এলপি গ্যাস ৭৫০, নাভানা এলপি গ্যাস ৭৪০টাকা ও বেকস্মিকোর ইস্মাট এলপি গ্যাস প্রতি বোতল বাজারে ৭৮০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব ব্যবসায়ী সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
বাড়তি লাভের আশায় দোকানের বাইরে ফুটপাতে রোদে ফেলে রাখা হয়েছে এসব সিলিন্ডার। রাস্তার কিনারে রাখা এসব সিলিন্ডারের পাশ ঘেঁষেই চলছে দ্রæতগামী যানবাহন। ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, এক একটি সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হলে তা একটি শক্তিশালি বোমার সমান বিস্ফোরিত হয়।
যে সব প্রতিষ্টান গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যাবসা করে থাকে, তাদের ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিতে হয়, ফায়ার সার্ভিসের কাগজপত্র সংগ্রহ করে বিষ্ফোরক দ্রব্য আইন মেনে ব্যাবসা করতে পারে।আইন না মেনে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যাবসা করলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ ছাড়াও ঝুকিপূর্ন সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ, ওজনে কমসহ বাড়তি দাম নেয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাহক।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, অরক্ষিতভাবে অবাধে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়টি আমারা অবগত আছি। যেসব দোকান বৈধ সনদ ছাড়া অবৈধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস বিক্রি করছে সেগুলোকে খুব শীঘ্রই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।