হরিণাকুন্ডুতে কাবিটা, টিআর, রেজিষ্ট্রি অফিস,হাট বাজার ইজারার ওয়ান পার্সেন্ট ও এলজিএসপির টাকা কাজ না করেই করা হচ্ছে হরিলুট

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ হরিণাকুন্ডু উপজেলায় কাবিটা, টিআর, রেজিষ্ট্রি অফিস এবং হাট বাজার ইজারার ওয়ান পার্সেন্ট ও এলজিএসপির টাকা কাজ না করেই হরিলুট করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ও পিআইও অফিসকে ম্যানেজ করে সরকারী অর্থ লুটপাটের এই মহোৎসব চললেও প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপ নেই। চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে কেও অভিযোগ করলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দায়সারা বক্তব্য দিয়ে কার্যত চেয়ারম্যানদের পক্ষেই অর্থ লুটের সাফাই গেয়ে থাকেন। ইতিমধ্যে এরকম অবৈধ আবদার পুরণ না করায় মারপিট করা হয়েছে হরিণাকুন্ডু উপজেলার এক ইঞ্জিনিয়রকে। এ ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন ফজলুর রহমান নামে এক চেয়ারম্যান। এদিকে ঝিনাইদহের হরিণাকুÐু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দকৃত কিছু অর্থের কোন কাজ করেন নি চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল। তার বিরুদ্ধে হরিণাকুন্ডু ইউএনও দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য বসির উদ্দিন, ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য সাইদুল ইসলাম, ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য গোলাম সরোয়ার, ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য আতিয়ার রহমান ও সংরক্ষিত ৭,৮,৯-এর সদস্য মোমেনা খাতুন। অভিযোগ দেওয়ার পর ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা অভিযোগের জবাব দিতে চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন। অন্যদিকে বেগতিক দেখে চেয়ারম্যান চরপাড়া বাজারে ইট বালু ফেলেছেন কাজ করার জন্য। প্রশ্ন উঠেছে যদি প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেই পিআইও এবং ইউএনও সরকারী অর্থ ছাড় করে থাকেন, তবে এখন এতো চিঠি চালাচালি আর মেম্বরদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার বিষয় আসছে কেন ?। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল পরিষদের কোন সভা ছাড়াই ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরের এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের কাজের জন্য নিজের ইচ্ছামতো প্রকল্প দাখিল করে তার সমুদয় অর্থ উত্তোলন করেছেন। এছাড়াও হাটবাজারের অর্থের ৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকার কাজ না করে তা উত্তোলন করে তিনি নিজের ইচ্ছামতো ব্যয় করেছেন। অভিযোগে ওই সদস্যরা আরও জানান, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে পরিষদের ট্যাক্স বাবদ আদায়কৃত ৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা আদায় করলেও সদস্যদের সম্মানি ভাতা না দিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে ব্যয় দেখিয়েছেন। এছাড়া পরিষদের ১% এর ২ লাখ ১২ হাজার টাকা, বিগত চার বছরের ট্রেড লাইসেন্স বাবদ আদায়ের প্রায় ৩ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ পরিষদের সভার অনুমোদন ছাড়াই তিনি উত্তোলন করেছেন। এসব অভিযোগের ছাড়াও টিআর ও কাবিখাঁ প্রকল্পের আওতায় বেসকয়েকজন সাধারণ মানুষের নামে টিউবয়েল আত্মসাত করা হয়েছে। ইউপি সদস্য আড়–য়াকান্ডি গ্রামের বসির উদ্দিন বলেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরের টিআর প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টিউবয়েল প্রকল্পের আওতায় ওই ইউনিয়নের চর আড়–য়াকান্দি গ্রামের আসাদুল, একই গ্রামের আত্তাব আলী, পেড়াহাটি গ্রামের আয়ুব আলী, কাচারিতোলা গ্রামের সাহেব আলী, একই গ্রামের শাহিন, নিত্যনন্দপুর গ্রামের আজাদসহ আরও অনেকের নামে টিউবয়েল বরাদ্দ দেখিয়ে দেন নি। চর আড়য়াকান্দি গ্রামের আত্তাব আলী ও আসাদুল ইসলাম জানান, তারা শুনেছেন তাদের নামে টিউবয়েল বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু তারা তা পাননি। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেযারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল বলেন, আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা। তিনি বলেন, কয়েকজনের নামে বরাদ্দকৃত টিউবয়েল পরিষদেই আছে। সেগুলো দ্রæত ভুক্তভোগীদের বাড়িতে স্থাপন করা হবে। হাট-বাজারসহ অন্যান্য প্রকল্পের কাজ নিয়ম অনুযায়ি করা হয়েছে। সেখানে কোন অনিয়ম হয়নি। এ বিষয়ে হরিণাকুন্ডুর ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, আমরা রঘুনাথপুরের চেয়ারম্যানকে একটা চিঠি দিয়েছি। তাছাড়া সরেজমিন গিয়ে আমি প্রকল্পগুলো তদন্ত করে দেখবো। হরিণাকুন্ডুর পিআইও জামাল হোসাইন বলেন, আমরা তো প্রকল্প দেখেই বিল দিয়েছি। তারপরও আমি এ বিষয় নিয়ে পরে আপনার সাথে কথা বলবো।