স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে ও গলায় বিষ ঢেলে হত্যার পর লাশ গোপনে দাফনের অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আলমডাঙ্গার জোড়গাছা গ্রামের শাহিন নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনা জানাজানি হলে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে স্বামীসহ পরিবারের সকলেই পালিয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের খবির উদ্দীনের ছেলে শাহিন হোসেন (৩০) গত ৮ বছর আগে দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে হিরা খাতুনকে ( 2৮) বিয়ে করে। তাদের সংসারে ৪ বছরের এক শিশুপুত্র আছে।
গ্রামবাসিরা অভিযোগ তোলেন যে, ২০ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শাহিন হোসেন শ্বাসরোধ করে স্ত্রী হিরা খাতুনকে হত্যার পর গলায় বিষ ঢেলে রাখে। পরে অজ্ঞান স্ত্রীকে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করে। পথিমধ্যে মারা গিয়েছে বলে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে। পরে স্ত্রী বিষ পানে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতিবেশিদের জানায়।
পরে গ্রামের মেম্বরসহ কয়েকজনের সাথে চুক্তি করে বিষয়টি শ্বশুরপক্ষের সাথে মীমাংসা করে মাটি দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। মেম্বরসহ কয়েকজন নেতার সহযোগিতায় ময়নাতদন্তের সুযোগ না দিয়েই তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের অপচেষ্টা করা হয়। বাপের বাড়ি থেকে যা যা নিহত হিরা এনেছিল তার সবই ফেরত দেবে ও মা হারা শিশুপুত্রের নামে নগদ টাকা ব্যাংকে জমা রাখবে শর্তে মীমাংসা করা হয়। কবর প্রস্তুত করা হয়। সন্ধ্যার পর পর লাশ দাফনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে, সন্ধ্যায় সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করে।
নিহত গৃহবধুর ভাই তারাচাঁদ জানান, শাহিন পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল। এ নিয়ে আমার বোনের সাথে তার প্রায় বিবাদ হতো। বোনকে ঠুনকো কারণে নির্মমভাবে মারধর করতো। ঘটনার দিন দুপুরেও মেরেছিল। তারপরও মীমাংসা করতে রাজি হয়েছিলাম। কারণ মামলা করলে তো শাহিনের জেল হবে। কিন্তু তাদের শিশু সন্তানের কি হবে ভেবেই মীমাংসা করতে রাজি হয়েছিলাম।
নিহত হিরা খাতুনের বাপ ফজলুল হক জানান, শাহিন হোসেন পরকীয়ার মত্ত। প্রায় স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। পরকীয়া প্রেমের কারণে আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। লাশ তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে।