২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভিজিডি কার্ডের ন্যায্য হিস্যা দাবি করলেন মহিলা মেম্বার: চেয়ার তুললেন পুরুষ মেম্বার

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
এপ্রিল ১১, ২০২৩
52
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাসুদ রানা শিপনের বিরুদ্ধে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সাবিয়া খাতুনকে চেয়ার তুলে মারধর করার অভিযোগ তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। চেয়ারের আঘাত তার মাথায় না লাগলেও হাতে লেগেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


ভিজিডি কার্ডের ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদ করায় সাবিয়া খাতুনকে তিনি শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।


অভিযোগসূত্রে জানা যায়, কালিদাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাসুদ রানা শিপন। গত ৯ এপ্রিল ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিডি কার্ড বিভাজন সংক্রান্ত মিটিং চলছিল।

বরাবরের মত মহিলা সদস্যদের কার্ড প্রাপ্তির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করতে চাইলে মহিলা সদস্যরা প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাসুদ রানা শিপন মহিলা সদস্যদের গালি দেন। মহিলা সদস্য সাবিয়া খাতুন প্রতিবাদ জানালে তাকে চেয়ার তুলে মারেন।

এতেও ক্ষান্ত হননি তিনি। তিনি মোবাইলফোনে রিং দিয়ে পারকুলা গ্রামের লাল্টু, পাইকপাড়া গ্রামের সোহাগসহ কয়েকজন যুবককে ডেকে নেন। তারা উপস্থিত হয়ে মহিলা সদস্যদের আরেক দফা গালমন্দ করেন। মারধরের হুমকি দেন।


এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মাসুদ রানা শিপনকে তার ০১৭৬৭০৪৮১৮৪ নাম্বারে রিং দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আশাদুল হক মিকা জানান, "আমি উপস্থিত ছিলাম না। শুনেছি - ওই দিন পরিষদে মিটিং ছিল। মিটিং চলাকালে ওয়ার্ড মেম্বর মাসুদ রানা শিপন মহিলা মেম্বরকে গালমন্দ করেন। ধাক্কাধাকি হয়। এক পর্যায়ে চেয়ার তুলে মহিলা মেম্বর সাবিয়াকে মারতে উদ্যত হয়। তারা সকলেই মেম্বর। মহিলা মেম্বররা তিনটি ওয়ার্ডের মেম্বার। তাদেরকে গালমন্দ করা উচিত হয়নি। এতে ইউনিয়ন পরিষদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।"


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। পরিষদের কাজে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে। এখানে তাদের মতামতের কোনো গুরুত্ব নেই।


তৃণমূল পর্যায়ের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। তাদের মধ্যে নেতৃত্বের সব ধরনের গুণাবলিও স্পষ্ট। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে কর্মক্ষেত্রে তারা উপেক্ষিত। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ।


পরিষদে নারী-পুরুষ সদস্যদের মধ্যে বৈষম্য প্রকট। তিনটি ওয়ার্ডে বণ্টনের জন্য একজন মহিলা মেম্বর যে সংখ্যক ভিজিডি কার্ড পান, পুরুষ সদস্যরা এক ওয়ার্ডের জন্য পান তার তিন/ চার গুণ কার্ড। এমনকিগুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজেও মহিলা সদস্যদের মতামতও নেওয়া হয় না। এমন সমস্যা প্রায় সকল ইউনিয়ন পরিষদে বিদ্যমান।


নারীর ক্ষমতায়ন বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই নারীর ক্ষমতায়নকে জাতীয় নীতিনির্ধারণে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং বেশকিছু ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।


বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। তাত্ত্বিকভাবে ক্ষমতায়নের সূচকগুলো পার করছে একের পর এক। অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন ইমপাওয়ার্ড ইউমেনের কাতারে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নারীরা পরবর্তী সময়ে তাদের ক্ষমতার ঠিক কতটুকু ব্যবহার করতে পারছেন –তা ইউনিয়ন পরিষদে মহিলা সদস্যদের অসহায়ত্ব দেখে বোঝা যায়। এখানে
নারীরা তার আইনগত অধিকার ও ক্ষমতার চর্চা করতে পারছে না আদৌ।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram