চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় পৃথক ৩টি হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। অস্ত্র মামলায় একজনকে ১০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। হত্যা মামলায় ৬ জনকে বেকুসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহা: রবিউল ইসলাম এ রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষণার পর দন্ডিতদের পুলিশ প্রহরায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হল- আলমডাঙ্গার শ্বাশড়ি হত্যা মামলার আসামী খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা গ্রামের আসীম কুমার ভট্রাচার্য্য ও চুয়াডাঙ্গা সিআইডি পুলিশের কনেস্টেবল, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন আনার ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা রামনগর গ্রামের জিয়ারুল ওরফে জিয়া। অস্ত্র মামলায় জিয়ারুল ওরফে জিয়াকে ১০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ জুন রাতে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মাদ্রাসাপাড়ায় সিআইডির কনেস্টেবল আসীম কুমার ভট্রাচার্য্য ছুরিকাঘাত করে শ্বাশুড়ি শেফালি আধিকারীকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। নিহতের স্বামী সদানন্দ আধিকারী বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামালা দায়ের করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমডাঙ্গা থানার এসআই সাইফুল ইসলাম একই বছরের ২৭ জুন একজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট প্রদান করেন। ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসামীর উপস্থিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে কন্দর্পপুর গ্রামে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই দুপুরে আনোয়ার হোসেন আনারসহ বেশ কয়েক জন মিলে কুপিয়ে ও পিটিয়ে প্রতিবেশি গিয়াস উদ্দিনকে হত্যা করে। নিহতের ভাই বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামী করে জীবননগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলাম ৭ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালেল ২৫ ফেব্রæয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আসামীদের উপস্থিতিতে আনোয়ার হোসেন আনারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। অন্য ৬ জনকে বেকুসুর খালাস প্রদান করা হয়। ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর রাতে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের রতিরামপুর গ্রামে বাড়ি ফেরার সময় আব্দুর রহিমকে দৃর্বৃত্তরা হত্যা বোমা মেরে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েক জনকে আসামী করে জীবননগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে জিয়ারুল ওরফে জিয়াকে পুলিশ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শফিকুল ইসলাম ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারি। বৃহস্পতিবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারদন্ড ও অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন।