১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপহরণ, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও ডাকাতিসহ একা‌ধিক মামলার আসামি তিওরবিলার বাবলু গ্রেফতার

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
জুন ৪, ২০২১
59
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


স্টাফরিপোর্টার: অপহরণ, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও ডাকাতিসহ হাফ ডজন মামলার আসামি আলমডাঙ্গার তিওরবিলার বাবলুকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এলাকায় পুলিশ প্রশাসনের কাছের লোক দাবি করা বাবলুর গ্রেফতারের সংবাদে খাসকররা ইউনিয়নজুড়ে অনেককে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে।


জানা যায়, অপহরণ, দাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও ডাকাতিসহ হাফ ডজন মামলার আসামি আলমডাঙ্গার তিওরবিলার রবিউল ইসলামের ছেলে বাবলুকে গতকাল আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সম্প্রতি হাকিমপুর গ্রামের দুই ভাইয়ের আলমসাধু চুরি হয়। এ ঘটনায় এলাকার দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। সে সময় আটককৃত দুজনই তিওরবিলার বাবলু ওই চুরির সাথে জড়িত বলে স্বীকারুক্তি দেয়। তাদের স্বীকারুক্তি মোতাবেক পুলিশ গতকাল বাবলুকে গ্রেফতার করেছে।


রায়সা গ্রামের কৃষক জামালকে অপহরণ করে গত ২০১২ সালে উপজেলার সিঙ্গা গ্রামের মাঠে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে রাতে সন্ত্রাসীরা তাকে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার রাইশা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে। হরিণাকুন্ড থানার ততকালীন ওসি আবুল খায়ের জানান, জামাল হোসেনকে আলমডাঙ্গা উপজেলার রায়শা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে। এরপর সন্ত্রাসীরা তার পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তাকে হাত-পা বেঁধে হত্যা করে হরিণাকুন্ডু উপজেলার বাথানদাঁড়ির মাঠের ভিতর ফেলে রেখে যায়।


অন্যদিকে, ২০১৫ সালের আলমডাঙ্গা উপজেলার কাবিলনগর গ্রামের মাঠপাড়ার দরিদ্র কৃষক শামসুল ইসলামের কিশোর ছেলে সলোক (১৭) ইসলামকে হত্যা করে। সন্ধ্যায় বাড়িতে অবস্থানকালে অজ্ঞাত ব্যক্তির রিং পেয়ে মোবাইলে কথা বলতে বলতে সলোক বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সারা রাত ফেরেনি। পরদিন ফেরেনি। এরই মধ্যে এক সকাল পৌনে ১০ টার দিকে রবি সিম নম্বর থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তি সলোকের মোবাইলে রিং দিলে সলোকের পিতা শামসুল ইসলামে রিং রিসিভ করেন। সে সময় অজ্ঞাত ব্যক্তি সলোকের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। পরে সরোজগঞ্জ বোয়ালিয়া নবগঙ্গা নদীর শ্মশানঘাটের একটি লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসি পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে সলোকের লাশ উদ্ধার করে।
আলমডাঙ্গা থানাসূত্রে জানা যায়, উপরোক্ত দুটি অপহরণ, মুক্তিপণের দাবিতে হত্যা মামলাসহ গ্রেফতার হওয়া বাবলু হাফ ডজন মামলার আসামি।


এলাকাসূত্রে জানা যায়, বাবলু খাসকররা এলাকায় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে এক দশকের বেশি সময় ধরে। তার পুলিশ প্রশাসনের সাথে ছিল অত্যন্ত সুসম্পর্ক। পুলিশের নাম ব্যবহার করে এলাকায় নির্বিঘ্নে বহু অপকর্মে লিপ্ত। জুয়ার বোর্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। উর্দ্ধতন পুলিশ অফিসারের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় তিওরবিলা ফাঁড়ি পুলিশও তার ভয়ে তটস্থ থাকতো বলেও নাম প্রকাশে অনেকে মন্তব্য করেন।
গতকাল বাবলু গ্রেফতার হওয়ার সংবাদ পেয়ে খাসকররা ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে বেশ উৎফুল্ল প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে।


আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর জানান, আলমসাধু চুরির সাথে জড়িত সন্দেহে পূর্বে দুজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছিল। তাদের স্বীকারুক্তি মোতাবেক বাবলুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নামে আলমডাঙ্গা থানায় ইতোপূর্বে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি, হত্যা, গুম ও ডাকাতিসহ ৬টি মামলা রয়েছে। সে নিজেকে পুলিশের সোর্স দাবি করে এলাকায় অপকর্ম করতো বলে অভিযোগ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram