২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়া মাত্র সাড়ে ৭ বছর বয়সে সুপার টেলেন্ট শিশুর সন্ধান

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
নভেম্বর ৭, ২০২১
35
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ- দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়া মাত্র সাড়ে ৭ বছর বয়সে রপ্ত করেছে ইংরেজি সঙ্গে ক্লাস নাইন টেনের অংক। নিমিষেই করে দিচ্ছে অ্যালজেবরা ও জ্যামিতির জটিল সমাধান। সুপার টেলেন্ট ও বিস্ময়কর এই শিশুটি নিয়ে চারিদেকে হৈ চৈ পড়ে গেছে। শিক্ষকরা আশাবাদি ক্ষুদে এই শিশুর ভবিষ্যাত খুবই উজ্জল। চিকিৎসকরা বলেছেন সচরাচর এমন শিশুর জন্ম খুবই বিরল। সিনেমা নয়, সত্যি সত্যিই এমন এক বিস্ময় শিশুর নাম সামিউন আলিম সাদ। ২০২০ সালে বাড়ির পাশে একটি প্রাইমারি স্কুলের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন তার পিতা। ২০২১ সালে দ্বিতীয় শ্রেণি।

বিশ্বব্যাপী করোনার মহামারিতে দুই বছরে স্কুল জীবনের এক মাসও ক্লাসে যাওয়া হয়নি শিশু সাদের। স্কুলে না গেলেও এ দু’বছরে সামিউন আয়ত্ত করেছে ইংরেজি। এই বয়সে ইংরেজিতে বলে দিচ্ছে পৃথিবীর মানচিত্রে থাকা সব দেশের ভূমি, পাহাড়, পর্বত আর সাগর মহাসাগরের অবস্থান। পৃথিবীর গঠন প্রকৃতি ভূমিকম্প ও আগেয়গিরির বর্ণনা করছে বিশেজ্ঞদের মতো। চোখের পলকে কলমের স্পর্শে এঁকে দিচ্ছে পৃথিবীর যে কোনো দেশের মানচিত্র। তার স্বপ্ন বড় হয়ে একজন বিজ্ঞানী, গণিতবিদ অথবা মহাকাশ বিজ্ঞানী হবে।

বর্ণনার এই বিস্ময় বালক সামিউন আলিম সাদ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের ব্যবসায়ী এএইচএম আলীমের ছোট ছেলে। মা আয়েশা আক্তার চার্লি কলেজের শিক্ষক। তাদের বসবাস কালীগঞ্জ শহরের মধুগঞ্জ বাজার এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে। গ্রামের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলা বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। এই বয়সে সাদ নিজেই একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে মহাকাশ, গণিত ও বিজ্ঞানের বিষয়ের কনটেন্ট আপলোড করছে। সামিউন আলিম সাদের পিতা আব্দুল আলিম জানান, অল্প সময়ের মধ্যে সাদ সবাইকে অবাক করে দিয়ে ইংরেজি শুদ্ধ উচ্চারণে রিডিং শিখে বোনের গণিত বই থেকে যে কোনো জটিল অ্যালজেবরা ও জ্যামিতির সমাধান করে সবাইকে চমকিয়ে দিচ্ছে। নবম শ্রেণির গণিত বইয়ের অ্যালজেবরা ও জ্যামিতির সমাধান করে দেখাচ্ছে। সামিউন আলিম সাদের মা আয়েশা আক্তার চার্লি জানান, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করার পর স্কুল থেকে বই দেয়। সে বই সামিউন তিন দিনে শেষ করে ফেলে।

তিনদিন পর সামিউন বলে, আব্বা আমার পড়া শেষ। ছেলের কথা শুনে প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি আমরা। তার মেধা ও বইয়ের পড়া ধরে আমরা অবাক হয়ে যায়। এরপর ছেলে বাহনা শুরু করে দ্বিতীয় শ্রেণির বই এনে দিতে। তার বাহনায় তৃতীয়, চতুর্থ এমনকি নবম শ্রেণির বই এনে দিলেও সব বই পড়ে শেষ করে ফেলে। কিন্তু তার বেশি আগ্রহ জিওগ্রাফি, গণিত ও জ্যামিতি, স্পেস ও প্লানেটস, ফিজিক্স এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি মানুষের শরীরে কিভাবে কাজ করে এবং কি ক্ষতি করে তা নিয়ে। স্থানীয় মোস্তবাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, শিশু সাদ অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী। সে ক্লাস নাইনের বীজগণিত এবং জ্যামিতির সমাধান খুব সহজেই করতে পারে।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক শিশু বিশেষজ্ঞ অলোক কুমার সাহা বলেন, এমন সুপার ট্যালেন্ট ছেলে খুব কমই জন্মায়। এ ধরনের ট্যালেন্টরা এমবিবিএস ডিগ্রি শেষ করার এক বছরের মধ্যে অধ্যাপক হতে পারে। সাদের মামা চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক ডিসি মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, সাদ তার বাবা-মা’র সঙ্গে আমার এখানে বেড়াতে এসেছিল। আমি আমার অফিসের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ করিয়ে দিই। সবাই সাদের সঙ্গে কথা বলেছে। বিভিন্ন রকম শ্রশ্নও করেছে। সাদের মেধা দেখে সবাই বিস্মিত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram