২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
এপ্রিল ১৩, ২০২১
31
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

শরিফুল ইসলাম রোকন: হাজারও মানুষ অপলক তাকিয়ে ৩০ ফুট উচ্চতার কাঠের দÐের দিকে। ২ জন মানুষ শূন্যে ঘুরছে একটি বাঁশের দুই মাথার রশিতে ঝুলে। দড়িটি বাঁধা ওই মানুষগুলোর পিঠের চামড়ার সঙ্গে গাঁথা বড় দুটি বড়শির সঙ্গে। চলছে উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি। বাজছে ঢাকঢোল।


বড়শিতে ঝুলে থাকা ২ জন তাঁদের সঙ্গে থাকা ফুল-জল, আবির, বাতাসা, নকুলদানা, আম ইত্যাদি ছিটিয়ে দিচ্ছেন অগণিত ভক্ত-দর্শকের দিকে। আলমডাঙ্গা শহরের ঘোষপাড়ার বিষুয়া বাবু মাঠ প্রাঙ্গণে এ দৃশ্য দেখছে সবাই।


দীর্ঘদিন ধরে আলমডাঙ্গা শ্রী শ্রী গাংবাড়ী কালী মন্দির প্রাঙ্গণে এ উৎসব হচ্ছে। পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করতে বরাবরের মতো এবারও ৫ দিনের মেলার আয়োজন করে। কিন্তু এ বছর করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে পাল্টে গেছে উৎসবের চিত্র। মেলা বন্ধ রেখে স্বল্প পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। ১৩ এপ্রিল সেখানে কয়েক হাজার ভক্ত-দর্শনার্থী সমবেত হন।


চড়ক পূজার উৎসবে আসা ডা. অমল কুমার বিশ^াস ও বিশ^জিৎ সাধুখাঁ বলেন, প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই চড়ক উৎসবের আয়োজন শুরু হয়। ধর্মানুরাগী ‘সন্ন্যাসীরা’ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৃত্যগীতের মাধ্যমে চড়ক পূজার জন্য চাল ও অর্থ সংগ্রহ করেন। এ দিনগুলোতে তাঁরা সন্যাসব্রত ও উপবাস পালন করেন। এ সময় স্থানীয় শ্মশানগুলোয় হিন্দুধর্মাবলম্বীরা নানা পূজা অর্চনা করে থাকেন।


উৎসব আয়োজক কমিটির সদস্য চঞ্চল ঘোষ বলেন, কয়েক বছর আগে থেকে এ পূজা চলে আসছে। প্রতিবছরের পূজা শেষে শিবমন্দিরের দিঘিতে ডুবিয়ে রাখা চড়কগাছকে নতুন পূজার সময় তুলে আনা হয়। মাঠের মাঝখানে গর্ত করে খাড়া করে বসানো হয় এ চড়কগাছ।

শ্রী শ্রী চড়ক পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি বিষু ঘোষ বলেন, আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে পূজার আনুষ্ঠানিকতা পরিচালনা করছি। স্বেচ্ছাসেবক টিম সব সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ নিশ্চিত করছে। ইতিপূর্বের পূজার সাথে মেলাও হতো। কিন্তু করোনার কারণে আমরা এবার মেলা বন্ধ রেখেছি। এ কারণে কোনো দোকানপাট বসতে দেয়া হয়নি।


আয়োজক সূত্র জানায়, বড়শিতে বিদ্ধ মানুষগুলোকে ঘোরানোর আগে সারা দিন ধরে নানা আচার পালন করা হয়। এর মধ্যে ‘পাটারভাঙা’ খুব জনপ্রিয়। বাঁশ দিয়ে বানানো উঁচু একটি ‘তাড়া’ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন ‘সন্ন্যাসীরা’। মানুষ ঘূর্ণনের জন্য পোঁতা কাঠের দÐটি মাঠের মাঝখানে বসানো। অনেকটা লাঙলের জোয়ালের মতো আরেকটি কাঠ এই কাঠের ওপর লম্বালম্বিভাবে বসানো। কাঠের মাথায় থাকে মাটি পর্যন্ত ঝোলানো কয়েকটি লম্বা দড়ি। কাঠের দÐের ঠিক নিচে একদল মানুষ শক্ত হাত দিয়ে ঘোরান দড়িগুলো। এটাই চড়ক পূজার মূল আকর্ষণ।


শ্রী শ্রী চড়ক পূজা উৎযাপন কমিটির সকল সন্ন্যাসীবৃন্দ মহামারী করোনায় মধ্যেও তারা সকলকে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরিধানের মাধ্যমে চড়কপূজার অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram