শ্বশুর বাড়ির পরিবর্তে শিক্ষার্থীকে স্কুলে পাঠালেন পুলিশ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : বিয়ের সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন। সকল প্রস্তুতিও শেষ। অপেক্ষা ছিল শুধুই বরের। বর আসলেই কনেকে শ্বশুর বাড়ি পাঠানো হবে। কিন্তু সেই মুহুর্তেই বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হল পুলিশ! পুলিশ আসার সংবাদ পেয়ে বরও আর আসেনি বিয়ে করে নববধূকে নিয়ে যেতে। বিয়েও হয়নি। পুলিশের হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেলো ১৪ বছর বয়সী নবম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী। শ্বশুর বাড়ির পরিবর্তে সেই শিক্ষার্থীকে স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন চুয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ। পিতার আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে মেয়েটির দায়িত্বও গ্রহণ করেন চুয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন। আজ শনিবার চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর থানার গাড়াবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
চুয়াডাঙ্গা থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানাল, স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট মানি খন্দকারের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, এখানে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সাথে আলমডাঙ্গা উপজেলার এক যুবকের সাথে বাল্যবিয়ে হচ্ছে। এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্কুলের শিক্ষকসহ আমরা বেলা ৩ টার সময় বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়। আমরা মেয়ের অভিভাবককে বুঝিয়ে বলার পর তিনি আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে মেয়ের পড়ালেখা চালানোর অক্ষমতা প্রকাশ করেন। তখন আমরা মেয়ের পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্বভার গ্রহণ করি। তাৎক্ষণিকভাবেই মেয়ের দুই বছরের স্কুল ফি, পরীক্ষার ফিসহ বিদ্যালয়ের সব খরচ পরিশোধ করে দিই। এছাড়াও তার যাবতীয় শিক্ষা উপকরণেরও ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
পরে সেখানে থাকা সবাই মিষ্টিমুখ করেন। ওসি বলেন, ' শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়ে এই শিক্ষার্থীর নতুন জীবন শুরু করতে চেয়েছিল পরিবার। আমরা স্কুলে পাঠিয়ে তার আরেকটি নতুন জীবন শুরু করলাম।'
এসময় স্থানীয় সীমান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছাম্মৎ মেহেজাবিন, স্থানীয় ইউপি সদস্য জিন্নু, মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট মানি খন্দকার, চুয়াডাঙ্গা থানার উপ পরিদর্শক মোহাম্মদ ইমরান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।