ক্লিনিকের ডিএমএফ ডাক্তার রুবেল বললেন,“আমার প্রেসক্রিপশন তো ক্লিনিকেই রয়েছে। আপনারা পেলেন কীভাবে?”

আলমডাঙ্গার ফাতেমা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে গিয়ে নওদা বন্ডবিল গ্রামের গৃহবধূ রেশমা খাতুন এখন মৃত্যু পথযাত্রি। চিকিৎসার নামে ৪ দিন আটকে রেখে পরে সিজার না করেই প্রসূতি রেশমা খাতুনকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা যায়, আলমডাঙ্গার নওদা বন্ডবিল গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক নূর ইসলামের স্ত্রী রেশমা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার শহরের ফাতেমা ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সে সময় আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানানো হয় যে প্রসূতিকে দ্রæত সিজার অপারেশন করতে হবে। কিন্তু ৪ দিন ভর্তি করে রেখেও সিজার করা হয়নি। প্রচন্ড ব্যাথায় চেচামেচি করলে প্রসূতিকে চিকিৎসা দিয়েছেন ডিএমএফ রুবেল হোসেন।
এক পর্যায়ে অসহ্য যন্ত্রণায় প্রসূতি পালিয়ে শহরের শেফা ক্লিনিক নামে আরেকটি ক্লিনিকে গিয়ে উপস্থিত হন। সেখানে আবার তাকে আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখতে পান যে প্রসূতির পেটের সন্তান মারা গেছে। পরে প্রসূতি আবার ফাতেমা ক্লিনিকে ফিরে গেলে ফাতেমা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ চুয়াডাঙ্গা থেকে বড় ডাক্তার নিয়ে এসে অপারেশন করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভর্তি করে নেয়।
কিন্তু পুরো একদিন অতিবাহিত হলেও সিজার করা হয়নি। বরং শেফা ক্লিনিকের আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল ডকুমেন্টস আটকে রেখে প্রসূতিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে আবার প্রসূতি শেফা ক্লিনিকে গিয়ে জীবন বাঁচানোর অনুরোধ করেন। এক পর্যায়ে সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মৃত শিশু প্রসব করানো হয়।
বর্তমানে হতদরিদ্র ভ্যানচালকের স্ত্রী রেশমার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। পেটের ভেতর ৩/৪ দিন ধরে মৃত শিশু থেকে যাওয়ায় অবস্থা খুবই খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে। পেটের ভেতর বাচ্চা মরে পঁচে গিয়েছিল। অপারেশন স্থলে ইনফেকশন প্রতিদিন বেড়ে চলেছে। প্রতিদিন শেফা ক্লিনিকে গিয়ে ড্রেসিং করিয়ে নিতে হচ্ছে।
শেফা ক্লিনিকের চিকিৎসক ডাক্তার আবু সালেহ মোহাম্মদ ইমরান জানান, প্রসুতির পেটে শিশু মরে পঁচে গিয়েছিল। এখন ইনফেকশন আছে। তাছাড়া বøাড দেওয়া লাগছে।
ফাতেমা ক্লিনিকে কর্তব্যরত ডিএমএফ রুবেল হোসেনের সঙ্গে এ সম্পর্কে কথা বলতে গেলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। কীভাবে তিনি ডিএমএফ হয়ে প্রেসক্রিপশন করেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রথমে প্রেসক্রিপশন দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। পরে প্রমাণ দেখানোর কথা বললে তিনি পালটা প্রশ্ন করেন “আমার প্রেসক্রিপশন তো ক্লিনিকেই রয়েছে। আপনারা পেলেন কীভাবে?”
ফাতেমা ক্লিনিকের মালিক হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সের এক্স-রে টেকনোলজিস্ট মনজুর আলী বলেন, আগেই তো এ বিষয়টা ম্যানেজ করা হয়েছে। এখন আবার নতুন করে কি হচ্ছে? রোগির প্রেশার ছিল বেশি।