দামুড়হুদায় রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারে পাঁচ বছর পর মামলার বিচার শুরু
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় সরকারি প্রতিষ্ঠানে নির্মাণকাজে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগে করা মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। মামলার প্রায় পাঁচ বছর পর গত রোববার দুপুরে কুষ্টিয়া বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলাম এই অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হলো।
দুদকের আইনজীবী আল মুজাহিদ মিঠু আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, আগামী ২ মে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে।
অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে মামলার চারজন আসামি উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢাকার তেজগাঁও এলাকার জয় ইন্টারন্যাশনালের প্রোপাইটার মনি সিং, শেওড়াপাড়ার ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সাত্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রধান কার্যালয়ের সাবেক প্রকল্প ক্রয় বিশেষজ্ঞ আইয়ুব হোসেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও আইসিটি উইংয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ও আইসিটি ব্যবস্থাপনা শাখার উপসহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন।
মামলার এজাহার, দুদকের আইনজীবী ও অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা মডেল থানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিনিয়র মনিটর ও ইভ্যালুয়েশন প্রকল্পের পরিচালক মেরিনা জেবুন্নাহার বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা স্থলবন্দরে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একক বা সম্মিলিত যোগসাজসে ভবন নির্মাণ ঢালাইয়ে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে।
মামলার পর দুজন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁরা জামিন পান। বাকি দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তাঁরা জামিন পান। বর্তমানে চার আসামিই জামিনে আছেন।
২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম মামলাটি দুদককে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। এরপর মামলাটি সমন্বিত কুষ্টিয়া দুদক কার্যালয়ে যায়। একপর্যায়ে মামলাটি তদন্ত করেন খুলনা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবুল হোসেন। তিনি তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর কুষ্টিয়া আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্টদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করেছেন।
দুদককের আইনজীবী আল মুজাহিদ মিঠু প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি তদন্ত শেষে প্রায় আড়াই বছর আগে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অবশেষে মামলার অভিযোগ গঠন হয়েছে।