দূর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে উপার্জনের শেষ সম্বল হারিয়ে দিশেহারা আরজু খাতুন
দূর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে উপার্জনের শেষ সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে আলমডাঙ্গা বেলগাছি মোল্লাপাড়ার আরজু খাতুন। ৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বেলগাাছি মোল্লাপাড়া ব্রিজের নিকট আরজু খাতুনের উপার্জনের শেষ সম্বল চা ও মুদি দোকানটি দূর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
জানা গেছে, বেলগাছি মোল্লাপাড়ার মনোয়ার হোসেন দেড়মাস আগে মরণ ব্যাধি ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। পরিবারের একমাত্র উপার্জন সক্ষমব্যক্তি মারা যাওয়ার পর মৃত মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী আরজু খাতুন তার কিশোর দুই সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। স্বামী রেখে যাওয়া শেষ সম্বল গ্রামে ব্রীজের নিকট চা ও মুদি দোকান চালিয়ে সংসার খরচ চালায়। প্রতিদিনের ন্যায় ৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করে দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে যায়। আনুমানিক রাত সাড়ে বারোটার দিকে প্রতিবেশিদের ডাক চিৎকারে আরজু খাতুনের ঘুম থেকে জেগে জানতে পারে তার উপার্জনের শেষ সম্বল দোকানটিতে দূর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। পাগলের মত চিৎকার করতে করতে আরজু খাতুন দোকানে নিকট ছুটে গিয়ে দেখতে পায় সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পুড়তে বাকি আছে শুধু চায়ের কেতলি গুলো।
আরজু খাতুন জানান, তার স্বামী এই চায়ের দোকান চালিয়েই সংসার চালাত। তার স্বামী গত দেড় মাস আগে মরণব্যাধি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই ছেলেকে নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়ার শেষ সম্বলটি অবলম্বন করে বাঁচার আশা দেখেছিলাম। কিন্তু আমার শেষ সম্বল টুকু বৃহস্পতিবার রাতে দূর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে শেষ হয়ে যায়। এ আগুন জ্বালিয়ে তারা শুধু আমার দোকানকে জ্বালিয়ে দিলো না , জ্বালিয়ে দিলো আমার এতিম শিশুদের মুখের আহার যোগানোর একমাত্র সম্বল টুকু। এখন আমার ছোট ছোট দুই সন্তান নিয়ে অথৈ পাথারে পড়েছি। কি করে সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করবো। সেই আশা অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়ায়েছে।
এলাকাবাসি জানায়, গভীর রাতে আরজু খাতুনের চা ও মুদি দোকানে আগুন দেখে পাড়ায় হৈচৈ শুরু হয়। ব্রিজের নিকট ছুটে এসে দেখতে পায় আরজু খাতুনের দোকানে দাও দাও করে আগুন জ্বলছে। এরই মধ্যে আরজু খাতুন সংবাদ পেয়ে কান্না করতে করতে ছুটে আসে। পাড়ার সবাই মিলে ক্যানেল থেকে পানি তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। ততক্ষনে আরজু খাতুনের শেষ সম্বল চা ও মুদি দোকান পুড়ে ভ’ষিভ’ত হয়ে যায়। আরজু খাতুনের সাথে গ্রামের কারো কোন শত্রæতা নেই। তবে কে বা কাহার তার দোকানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে তা কেউ বলতে পারিনি।
আমি দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানাই। এবিষয়ে আরজু খাতুন আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।