কুষ্টিয়ার সন্তান সঙ্গীতশিল্পী এস আই টুটুল এবং অভিনেত্রী তানিয়ার বিচ্ছেদ

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী এস আই টুটুল এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদের দীর্ঘ ২৩ বছরের দাম্পত্য জীবনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটেছে। শোবিজ অঙ্গনে একসময় 'হ্যাপি কাপল' হিসেবে পরিচিত এই তারকা দম্পতির বিচ্ছেদের খবরে ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে বিষণ্নতার আবহ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, পারস্পরিক মতের অমিল এবং সময়ের ব্যবধানে সম্পর্কের উষ্ণতা কমে যাওয়ায় আলোচনার মাধ্যমেই তারা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই দম্পতির সংসারে তিনটি সন্তান রয়েছে। কোনো অভিযোগ বা কোলাহল ছাড়াই সম্মানজনকভাবে সম্পর্কের ইতি টানার সিদ্ধান্তকে অনেকেই বাস্তবতা ও পরিণত বোধের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। 'জীবন যেমন একসঙ্গে শুরু হয়, তেমনি কখনো কখনো সম্মানের সঙ্গেই শেষও হয়'—এই বিচ্ছেদ যেন সেই কঠিন বাস্তবতারই প্রতিচ্ছবি। বর্তমানে টুটুল ও তানিয়া দুজনেই নিজ নিজ জীবনের নতুন অধ্যায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
কুষ্টিয়ার কৃতী সন্তান এস আই টুটুল বহু জননন্দিত গান উপহার দিয়ে শ্রোতাদের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি এখন পর্যন্ত চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর মধ্যে 'দারুচিনি দ্বীপ' চলচ্চিত্রে অনবদ্য সঙ্গীত পরিচালনার জন্য তিনি প্রথম জাতীয় পুরস্কার পান। পরবর্তীতে 'ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না' ও 'বাপজানের বায়োস্কোপ' চলচ্চিত্রে গায়ক ও সুরকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া 'নিরন্তর' সিনেমার জন্য ভারতের চলচ্চিত্র উৎসবেও পুরস্কৃত হন তিনি।
২০০৪ সালে 'ব্যাচেলর' সিনেমার জনপ্রিয় গান "কেউ প্রেম করে, কেউ প্রেমে পড়ে"-এর মাধ্যমে এল আর বি ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে নতুনভাবে আলোচনায় আসেন এস আই টুটুল। এরপর 'হৃদয়ের কথা' সিনেমায় তাঁর কণ্ঠে গাওয়া "যায় দিন যায় একাকী" গানটি তাঁকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সাহচর্যও তাঁর সৃষ্টিশীল জীবনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। গায়ক ও সুরকারের পাশাপাশি তিনি সফলভাবে সিনেমায় সঙ্গীত পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন। 'হৃদয়ের কথা', 'রানী কুঠির বাকী ইতিহাস', 'রং নাম্বার', 'তুমি আছো হৃদয়ে', 'আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা', 'বাপজানের বায়োস্কোপ'-এর মতো একাধিক চলচ্চিত্রে তাঁর সঙ্গীত দর্শক-শ্রোতার প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ব্যক্তিজীবনে তিনি মডেল ও অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদকে বিয়ে করেছিলেন। দীর্ঘ পথচলার পর সেই সম্পর্কের ইতি টানলেও, দুজনের শিল্পীসত্তা ও অবদান বাংলা সংস্কৃতির অঙ্গনে আলাদাভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সময় বদলায়, মানুষও বদলায়। সম্পর্ক ভাঙলেও রয়ে যায় স্মৃতি, সম্মান ও সৃষ্টির উত্তরাধিকার। এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদের নতুন জীবনের পথচলায় রইল অগণিত শুভকামনা।











