আলমডাঙ্গায় সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসির সৌজন্য সাক্ষাত

সন্ধ্যার হালকা সোনালি আলোয় আলমডাঙ্গা থানার হলঘর যেন নতুন প্রত্যয়ের সঞ্চার হল। নবাগত অফিসার ইনচার্জ বানী ইসরাইল–র সাথে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়ে সেই সন্ধ্যা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল। গতকাল ১০ ডিসেম্বরের ওই সৌজন্য সাক্ষাত সভায় সভাপতিত্ব করেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি বানী ইসরাইল।
ওসি বানী ইসরাইল তার বক্তব্য শুরু করেন থানা ও এলাকায় দায়িত্ব নেয়ার অনুভূতি তুলে ধরে। তিনি বলেন, “আলমডাঙ্গা একটি শান্ত, অথচ চ্যালেঞ্জপূর্ণ এলাকা। এখানকার মানুষ শান্তি, নিরাপত্তা ও সুবিচারের অধিকার রাখে। আমি চাই আমাদের পুলিশ ব্যবস্থা মানুষের আস্থা, সহমর্মিতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার শক্তির প্রতীক হোক। মাদক, কিশোর অপরাধ, যানবাহনের অনিয়ম, রাতের নিরাপত্তাহীনতা—এসব সমস্যা আমরা দৃঢ় মনোভাব ও কঠোর নজরদারিতে মোকাবেলা করব। পুলিশের কাজ হবে স্বচ্ছ, মানবিক ও জবাবদিহিমূলক। কিন্তু এ কাজে একা আমরা সফল হতে পারি না—আপনাদের, সাংবাদিকদের সহযোগিতা আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। সাংবাদিকরা যখন সত্য ঘটনাকে তুলে ধরবেন, আমাদের পদক্ষেপ আরও কার্যকর হবে, জনতার আস্থা আরও দৃঢ় হবে।”
বক্তব্যে তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা চাই থানার প্রতিটি গ্রাম, বাজার, রাস্তায়—প্রত্যেক জায়গায় মানুষ নিরাপদবোধ করুক। প্রতিটি ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হবে প্রগতিশীল, আমাদের কর্মপদ্ধতি হবে দায়বদ্ধ। সাংবাদিকরা আমাদের চোখ, আমাদের কান। তাই আপনাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আমাদের নীতি ও পরিকল্পনাকে আরও শক্তিশালী করবে।”
সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দৈনিক মাথাভাঙ্গা ও কালের কণ্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক রহমান মুকুল। তিনি বলেন,“সত্যের পথে পুলিশের অগ্রযাত্রায় সাংবাদিকরাই সহযাত্রী। আমরা শুধু খবর তুলে ধরব না, দায়িত্ববোধ এবং পেশাগত সততা দিয়ে পুলিশকে জনগণের বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব। জনগণের আস্থা অর্জন করাই হবে আলমডাঙ্গার শান্তি ও নিরাপত্তার মূল চাবিকাঠি। পুলিশের কঠোর পরিশ্রম ও জনগণের সহযোগিতা মিলেই আমাদের লক্ষ্য পূর্ণ হবে।”
আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাহিদ হাসান বলেন, “সত্যের পথে পুলিশের অগ্রযাত্রায় সাংবাদিকরাই সহযাত্রী। দায়িত্ববোধ, তথ্যভিত্তিক সংবাদ ও পেশাগত সততা—এসবই হবে আলমডাঙ্গার শান্তি ও নিরাপত্তার হাতিয়ার। জনগণের আস্থা অর্জন করাই আমাদের সবার মূল লক্ষ্য।”
আরও বক্তব্য রাখেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জু আহমেদ, আল আমিন পরশ, শরিফ আহমেদ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন -- স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিনিধি - উপজেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি সোহেল হুদা, মুর্শিদ কলিন, ইখলাস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক শাওন, সাংগঠনিক সম্পাদক এম সন্জু আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রোকন, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহরিয়ার শরিফ, ধর্ম সম্পাদক ইকলাস উদ্দিন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক কাজী সোহাগ,ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রিপন আলী, প্রচার সম্পাদক মীর রোকনুজ্জামান,কার্যনির্বাহী সদস্য খোন্দকার সালাউদ্দিন,সাইদুল ইসলাম, রফিকসহ
ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। সভা চলাকালীন সাংবাদিকরা ওসির সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনে এলাকাভিত্তিক সমস্যাগুলো তুলে ধরেন, যেমন—দুর্ঘটনাপ্রবণ রাস্তা, মাদকচক্র, কিশোর অপরাধ, রাতের অন্ধকারে নিরাপত্তাহীনতা। ওসি বানী ইসরাইল প্রতিটি সমস্যার গুরুত্বের বিষয় নিশ্চিত করে তা সমাধানের জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
সভা শেষে সাংবাদিকরা নবাগত ওসির প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন। উপস্থিতরা জানাচ্ছেন, এই সাক্ষাত শুধু সৌজন্য নয়, বরং স্থানীয় সাংবাদিক ও পুলিশের মধ্যে এক নতুন সংযোগ স্থাপনের উদোগ, যা ভবিষ্যতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাস্তব সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সন্ধ্যার আলো যদিও ধীরে ধীরে হালকা হয়ে আসে, কিন্তু নবাগত ওসির প্রত্যয়, সাংবাদিকদের সহযোগিতার অঙ্গীকার এবং আলমডাঙ্গার শান্তি ও নিরাপত্তার আকাঙ্ক্ষা প্রতিটি মানুষের মনে দীর্ঘক্ষণ ধরে ঝলমল করবে—নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, নতুন প্রত্যয়, নতুন নিরাপত্তার অঙ্গীকারের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠে সন্ধ্যা।












