১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগস্টের পটপরিবর্তনকালীন স্থবির থানাকে সচল করে সাহস ফিরিয়ে এনেছিলেন মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান-পিপিএম

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
134
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
ছবি : 


২০২৪ সালের ৫ আগস্ট। পটপরিবর্তনের পর দেশের প্রায় সব থানায় পুলিশিং যেন থমকে গিয়েছিল। ভয়, অনিশ্চয়তা আর অপরাধের উচ্ছৃঙ্খলতায় ঢাকা ছিল থানা। দেশের অন্যান্য থানার মতো আলমডাঙ্গারও পুলিশ কার্যত স্থবির। ভয়ে সংকুচিত পুলিশ, উচ্ছৃঙ্খল অপরাধীরা, থানা অভ্যন্তর নিস্তব্ধ। ঠিক এই ক্রান্তিকালেই ১৬ অক্টোবর যোগ দেন জনাব মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান, পিপিএম।


দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম মুহূর্ত থেকেই তিনি স্থবিরতার অন্ধকার ভেঙে, থানা মাঠে নামান। অভিযান ও টহল শুরু হলে অপরাধীরা আতঙ্কিত হতে থাকে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ফিরে আসে নিরাপত্তার আস্থা। থানা, যা একসময় ভয়ের ছায়ায় ঢাকা ছিল, ধীরে ধীরে সচল হয়ে ওঠে।


দেড় বছরে তার নেতৃত্বে মাদক সংক্রান্ত ১৫৭টি মামলায় ২৩৫ জন গ্রেফতার হন। উদ্ধার করা হয় গাঁজা, ইয়াবা, ট্যাবলেট, ইনজেকশন, ফেন্সিডিল, চোলাই মদ, গাঁজার গাছ, মোটরসাইকেল, পাখিভ্যান ও বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা। প্রতিটি পদক্ষেপ সমাজকে নিরাপদ করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।


১১ টি অস্ত্র মামলায় ঘটনায় ২৩ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে বিদেশি পিস্তল, রিভলবার, ওয়ান শুটারগান, তরবারি, চাপাতি, ছোরা। প্রতিটি অভিযান মানুষের জীবন রক্ষার জন্য।


চুরি, ডাকাতি ও দস্যুতা প্রতিটি অপরাধ দমন করা হয়েছে। চুরি মামলায় ১১৩ জন গ্রেফতার, ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনায় মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, দেশীয় অস্ত্র ও নগদ টাকা উদ্ধার। চাঁদাবাজি দমন করা হয়েছে।


ধর্ষণ, অপহরণ ও নিখোঁজ মামলার ২১ জন অপহৃত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরানো হয়েছে। জিডি ও অভিযোগের ভিত্তিতে আরও ৮৮ জন উদ্ধার। ধর্ষণ মামলায় ১০ জন আসামি আদালতে পাঠানো হয়েছে।


৭ টি হত্যা ও ক্লুলেস মার্ডার মামলায় ২২ জন গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র, যানবাহন ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে।


এই সাহসী নেতৃত্বের স্বীকৃতি এসেছে দ্রুত। মাত্র চার মাস ১২ দিনে তিনি পান প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম)। খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচিত হন শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ। এক বছর দুই মাসের মধ্যে জেলার অধিকাংশ মাসে তিনি ছিলেন জেলার সেরা ওসি।


২০২৫ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি আলমডাঙ্গা থানা থেকে বদলি হয়েছেন। তবে তিনি থানাকে সচল করে, পুলিশে সাহস ফিরিয়ে এনে, সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরিয়ে দিয়ে যে অবদান রেখেছেন সেটি আলমডাঙ্গার ইতিহাসে স্থায়ী হয়ে থাকবে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram