আলমডাঙ্গায় ছেলের জানাজার ১২ ঘণ্টা পর মায়ের মৃত্যু।। পরিবারে শোকের ছায়া

আলমডাঙ্গায় এক মর্মান্তিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে ছেলের জানাজার মাত্র ১২ ঘণ্টা পর মায়ের মৃত্যুর ঘটনা। এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া, কান্নায় ভেঙে পড়েছে পুরো পরিবার ও স্বজনেরা।
গত মঙ্গলবার রাতে আলমডাঙ্গা দারুস সালাম ঈদগা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম আব্দুল মান্নান মিয়ার মেজো ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন তোতা মিয়ার নামাজে জানাজা। তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সাইনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩১ অক্টোবর (শুক্রবার) মৃত্যুবরণ করেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তোতা মিয়ার মরদেহ নিউইয়র্ক থেকে দেশে এসে পৌঁছালে আলমডাঙ্গার নিজ বাড়িতে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আত্মীয়–স্বজন, প্রতিবেশী ও শুভানুধ্যায়ীরা ছুটে আসেন শেষবারের মতো তাঁকে দেখার জন্য। এ সময় তাঁর বৃদ্ধা মা হাজী ফজিলাতুন্নেছা (৮৯) ছিলেন অসুস্থ, তবে ছেলের মৃত্যু সংবাদে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
রাত ৯টার পর এশার নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত হয় তোতা মিয়ার জানাজা। জানাজার দোয়া শেষ না হতেই শোকের ভারে নিস্তব্ধ হয়ে যায় পুরো বাড়ি।
আর সেই রাত পেরিয়ে বুধবার সকালেই খবর আসে—মা হাজী ফজিলাতুন্নেছাও ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সন্তানের দাফনের ১২ ঘণ্টার ব্যবধানেই মায়ের প্রাণ চলে গেল—যেন মায়ের হৃদয় ছেলের অনুপস্থিতি সহ্য করতে পারেনি।
বুধবার বাদ আসর দারুস সালাম ঈদগা মাঠেই অনুষ্ঠিত হয় ফজিলাতুন্নেছার নামাজে জানাজা। জানাজায় অংশ নেন পরিবারের সদস্য, স্বজন, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ব্যাংকার, সমাজসেবকসহ এলাকার অসংখ্য মানুষ।
দোয়া পরিচালনা করেন আলমডাঙ্গা কাচারি মসজিদের ইমাম মাওলানা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের।
জানাজায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম, আলহাজ্ব আহমেদ আলী, আলহাজ্ব মোফাজ্জল হোসেন, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, ব্যাংকার আনছার আলী, ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ বেল্টু, বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিয়া মিলন, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সরকারি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন, সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মজিদ, ডা. আজিজুল হক সোমা, সাংবাদিক হামিদুল ইসলাম আজমসহ স্থানীয় সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
মৃত্যুকালে হাজী ফজিলাতুন্নেছা দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি–নাতনি ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
জানাজা শেষে তাঁকে দারুস সালাম কবরস্থানে দাফন করা হয়।












