আলমডাঙ্গার কালিদাসপুরের প্রেমিকার পর্নোগ্রাফি মামলায় ভেড়ামারা উপজেলার সমন্বয়ক সাদিক হোসেন গ্রেফতার

ফেসবুকে পরিচিত আলমডাঙ্গার কালিদাসপুরের প্রেমিকার দায়ের করা পর্নোগ্রাফি মামলায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া সাদিক হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিয়ে ভেড়ামারা থেকে আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনে দেখা করতে এলে প্রেমিকার সেনা সদস্য স্বামী ও আত্মীয়রা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
গ্রেফতারকৃত গোলাম কিবরিয়া সাদিক হোসেন (২৩) ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর গ্রামের মুকুলের ছেলে। তিনি ভেড়ামারা উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা সমন্বয়ক ছিলেন।
এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর গ্রামের সহিদুর রহমানের মেয়ে তানজিলা তাবাচ্ছুম ঐশী (২২)-এর সাথে প্রায় এক বছর আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় সাদিক হোসেনের। ঐশী বিবাহিত তার স্বামী সেনা সদস্য। তার স্বামীর বাড়ি মিরপুর উপজেলার নান্দিয়া সুতাইল গ্রামে। পরিচয়ের সূত্র ধরে আসামী ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে বিভিন্ন সময় ঐশীকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
গত ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে জন্মদিনের দাওয়াতের কথা বলে সাদিক ঐশীকে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা থানার আল্লারদরগা এলাকায় তার নানার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন অবস্থায় তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
পরে ঐশীর অজান্তে ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে দেখা করতে বাধ্য করত সাদিক। একপর্যায়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে আলমডাঙ্গার আলতায়েবা মোড়ে ঐশীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে পালিয়ে যায় আসামী।
পরে সাদিক ঐশীর স্বামীর হোয়াটসঅ্যাপে অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে দেয়, যার ফলে ঐশীর দাম্পত্য জীবনে অশান্তি সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি ঐশী তার পরিবারকে জানালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপর ৬ অক্টোবর বিকেলে ঐশীকে নিতে আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনে এলে তার স্বামী ও আত্মীয়রা কৌশলে সাদিককে আটক করে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ মাসুদুর রহমান (পিপিএম) বলেন, ভুক্তোভোগী পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছে। এ মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।
ঐশীর প্রেমিক সাদিকের দাবি: প্রায় ১৫ মাস আগে ফেসবুকে ঐশীর সঙ্গে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সে জানতো ঐশীর স্বামী সেনা সদস্য। দাবি করে, আমরা একাধিকবার আত্মীয়ের বাড়িতে দেখা করেছি এবং একাধিকবার মিলত হয়েছি। ঐশী নিজে বিভিন্ন ছবি তুলে আমাকে পাঠাতো। ৬ অক্টোবর ঐশী নিজেই আমাকে দেখা করতে ডাকে, কিন্তু ডেকে নিয়ে আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমাদের দুজনের মোবাইল ও ম্যাসেঞ্জার তল্লাশি করলে সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে।












