বিএমইউ'র নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সদস্য হলেন আলমডাঙ্গার সন্তান অধ্যাপক ডাঃ আতিয়ার রহমান

রহমান মুকুল: আলমডাঙ্গার শ্যামপুরের মাটিতে জন্ম নেওয়া এক স্বপ্নবাজ ছেলেই আজ দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চ আসনে। অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ আতিয়ার রহমান সম্প্রতি বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি (সাবেক বিএসএমএমইউ)-এর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি শিশু অনুষদের ডিন ও পালমোনলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত নয়, আলমডাঙ্গা ও সমগ্র চুয়াডাঙ্গার মানুষের গর্বের প্রতীক হিসেবে দেখেন এলাকাবাসী।
চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার শ্যামপুর গ্রামের গর্বিত সন্তান তিনি। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে আজ দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের শীর্ষ আসনে। অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ আতিয়ার রহমান সম্প্রতি বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি (সাবেক বিএসএমএমইউ)-এর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি শিশু অনুষদের সম্মানিত ডিন ও পালমোনলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
১৯৬৭ সালের ১২ অক্টোবর শ্যামপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া প্রখর মেধাবী আতিয়ার রহমান ছোটবেলা থেকেই ছিলেন স্বপ্নবাজ। ১৯৮৩ সালে আলমডাঙ্গা পাইলট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে সেন্টার ফাস্ট হয়ে এসএসসি পাস করেন। ১৯৮৫ সালে আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকেও সেন্টার ফাস্ট হয়ে এইচএসসি পাস করে আলোড়ন তোলেন। এরপর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে এবং মেধাতালিকার শীর্ষে থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন শুরু করেন বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে প্রভাষক হিসেবে। এরপর সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজে রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে বিসিপিএস থেকে এফসিপিএস অর্জন করেন। ২০০২ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে যোগ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে সহকারী অধ্যাপক থেকে পূর্ণ অধ্যাপক হলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে ১৩ বছর অপেক্ষা করতে হয়। অবশেষে ২০২৪ সালের আগস্টে প্রাপ্য পদোন্নতি পান।
চিকিৎসা ও শিক্ষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও রেখেছেন অবদান। ইতালি, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, ভারত ও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে তাঁর গবেষণা উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ করে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার (PICU) ও পেডিয়াট্রিক ব্রঙ্কোস্কপি বিষয়ে বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি শুধু শিশু অনুষদের ডিন নন, একই সঙ্গে শিশু পালমোনলজি উইংয়ের প্রধান, বিসিপিএসের সিনিয়র এক্সামিনার এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশন রেসিডেন্সি কোর্সের ডিরেক্টর।
ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই কন্যার জনক। বড় মেয়ে ডাঃ নাফিসা রহমান ঐশি চিকিৎসক হয়ে ইন্টার্নশিপ করছেন, আর ছোট মেয়ে নাবিলা রহমান শশি পড়াশোনা করছেন ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব গ্রীনউইচে।
ডাঃ আতিয়ার রহমান সবসময় বিশ্বাস করেন— চিকিৎসা কেবল পেশা নয়, এটি মানবসেবার এক মহান দায়িত্ব। তাই তিনি নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন গরিব-অসহায় মানুষের জন্য। এলাকাবাসীর প্রতি রয়েছে তাঁর অপরিসীম দরদ।












