বিএনপি নেতা এমদাদুল হক ডাবু আর নেই: আলমডাঙ্গা হারালো একজন শ্রদ্ধাভাজন নেতা

আলমডাঙ্গা বিএনপির পরিচ্ছন্ন ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিক, জননন্দিত সংগঠক এবং সুস্পষ্ট কণ্ঠের ধারক ও সুবক্তা এমদাদুল হক ডাবু আর নেই ( ইন্না ইলাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। ১৫ জুন বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন তিনি। মৃত্যকালে বয়স হয়েছিল (৫৬) বছর।
দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ভারত থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষবারের মতো আর ফেরেননি।
■ রাজনৈতিক জীবন: জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দর্শনের অবিচল সেনানী ছিলেন তিনি। জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ পথের নীরব বিশ্বাসের অক্লান্ত পথিক ছিলেন।
কালিদাসপুরের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া এমদাদুল হক ডাবুর রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রদল দিয়ে। তার পিতা প্রয়াত আব্দুল মালেক মিয়া ছিলেন জাতীয়তাবাদী দলের বিশিষ্ট নেতা। তার অন্যান্য ভাই ও চাচাতো ভাইয়েরাও বিএনপির নেতৃত্বের সাথে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত।
এমদাদুল হক ডাবু ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি,
ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবদলের প্রাক্তন সভাপতি, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য,
কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য (সাবেক) ও বর্তমানে আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি।
তিনি ছিলেন মার্জিত, যুক্তিনিষ্ঠ ও আত্মমর্যাদাশীল। তিনি রাজনীতি করতেন—শব্দের শক্তিতে, চিন্তার স্থিরতায় ও যুক্তির পরাকাষ্ঠায়। তাঁর শালীন উচ্চারণ ও সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে আলাদা করেছিল শত সহস্র কণ্ঠ থেকে। মার্জিত ও ভদ্রলোক হিসেবে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে সুখ্যাতি ছিল তার।
■ ব্যক্তিজীবনে
একজন আদর্শবাদী মানুষ হিসেবে পরিবারেও ছিলেন দায়িত্বশীল।
তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র পুত্র সন্তানকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন এক আত্মিক আবহ।
নানাবিধ দায়িত্ব ও ব্যস্ততার মাঝেও পরিবারের প্রতি নিবেদিত ছিলেন।
শিক্ষিত, নম্র ও সমাজসচেতন সন্তান রেখে গেছেন তিনি।
■ শোকের ছায়া;
তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই আলমডাঙ্গার আকাশটা যেন ভারী হয়ে ওঠে। অব্যক্ত যন্ত্রণায় মুক হয়ে যায়। মুহুর্তে শহর বিষন্নতার কালো মেঘে ছেয়ে যায়।
বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, সুশীল সমাজ ও সাধারণ মানুষ শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন।
তার আকস্মিক মৃত্যুতে আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির পক্ষ থেকে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলামও অনুরূপ শোকবার্তা প্রদান করেছেন। নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেছেন, "এমদাদুল হক ডাবু ছিলেন সংগঠনের আদর্শিক সৈনিক।
তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।"
বিপক্ষ মতের রাজনীতিকরাও তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন।
কারণ তিনি কখনোই কাউকে অপমান করেননি, ব্যঙ্গ করেননি, গালিগালাজ করেননি।
জানাযা শেষে আজ ১৬ জুন সকাল ১০ টায় মরহুমের লাশ কালিদাসপুর দক্ষিণপাড়া গোরস্তানে দাফন করা হবে। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের নিকট দু' আ চাওয়া হয়েছে।
আজকের পর পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক এমদাদুল হক ডাবুকে আর দেখা যাবে না। তিনি হারিয়ে গেলেন, কিন্তু রেখে গেলেন এক ধ্রুপদী শূন্যতা
যেখানে কেউ হয়ত দাঁড়িয়ে থাকবে
কিন্তু কেউ আর হবেন না—এমদাদুল হক ডাবু।