১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে একের পর “ভূতুরে অগ্নিকান্ড” কোন কিছুতেই থামছে না

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
মে ২০, ২০২৫
88
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে একের পর “ভ‚তুরে অগ্নিকান্ড” কোন কিছুতেই থামছে না। অলৌকিক ঘটনা মনে করে ঢাকার নরসিংদী থেকে মুফতি রবিউল ইসলামে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনিও কুরআনি রুকাইয়া করেও থামাতে পারেননি“ভ‚তুরে অগ্নিকান্ড”। আলমডাঙ্গা থানা পাড়ায় স্কুলি শিক্ষকের বাড়িতে ভ‚তুরে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এলাকাবাসির মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।


স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে অলৌকিকভাবে ঘরের আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে যাচ্ছে । ২ মাস ধরে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, তবু পুড়ে গেছে ঘরে লাগানো এসি। গত তিন মাসে ওই শিক্ষকের ঘরের কুরআন শরিফ, প্লাস্টিকের আসবাবপত্র, খাটের জাজিম, পরনের কাপড়, বই-খাতা, প্লস্টিকের শাওয়ার, হ্যাঙ্গার, বৈদ্যুতিক সুইচ এমনকি বাড়ির ছাদে থাকা পানির ট্যাংকিও আগুনে পুড়ে রগছে। বাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেও সমস্যার সমাধান মেলেনি।


ঘটনাটি ঘটছে আলমডাঙ্গা থানাপাড়ার স্কুল শিক্ষক আক্তারুজ্জামানের বাড়িতে। এটা ভূতুড়ে আগুন নাকি কোনো রাসায়নিক পদার্থের কারণে আগুন লাগছে তা কেউই বলতে পারছে না। বাড়ির আসবাবপত্রে হঠাৎ আগুন ধরে যাওয়া, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার পরও এসি পুড়ে যাওয়া, ঘরে থেকে পানির জগ নিচে বাড়িতে ছুড়ে ফেলে দেওয়ায় স্থানীয় লোকজন এ ঘটনাকে অলৌকিক ঘটনা বলে দাবি করছে।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর আগে আলমডাঙ্গার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আক্তারুজ্জামান তিন তলা বাড়ি নির্মাণ করেন। সেখানে তিনি বসবাস করছেন দুই ছেলে, স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে। প্রায় ৩ মাস ধরে তার বাড়িতে ঘটছে ভূতুড়ে আগুনের ঘটনা। সর্বশেষ রোববার সন্ধ্যায় তার বাড়িতে হঠাৎ আগুন ধরে যাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।


সরেজমিন ওই স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়িতে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। প্রায় দুই মাস ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বাড়িতে। ঘরের সব বৈদ্যুতিক তার খুলে ফেলা হয়েছে। তারপরও আগুন ধরা বন্ধ হয়নি।


স্কুল শিক্ষ আক্তারুজ্জামান জানান, প্রায় ৩ মাস আগে পরপর দুই দিন বিদ্যুৎ লাইনের মেইন তার মিটার থেকে কে বা কারা কেটে নিয়ে যায। তার ঘরে কিছু বড় বড় বড়শি পায়। তার কয়েকদিন পর আমার ঘরের, মোটরসাইকেলের, আলমারির চাবি গায়েব হয়ে যায়। বৈদ্যুতিক লাইট জ¦ালাতে গেলে সুইজ পুড়ে গলে যাচ্ছিল। তিনি বিদ্যুৎ অফিস থেকে লোক নিয়ে আসে। তারা জানায় লাইনের কোন সমস্যা নেই। পরে তিনি বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন । কয়েকদিন আগে সন্ধ্যায় তিনি দেখতে পান তার দরজার পর্দায় আগুন জ¦লছে। দ্রæত আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তারপর তার শ^াশুড়ি নামাজ পড়ার সময় কাপড়ের আচলে আগুন ধরে যায়। তার মোবাইল ফোনটিও উধাও হয়ে গেছে। তার ঘরের প্লাস্টিকের সবকিছু একে একে পুড়ে গেছে। বাড়ির ছাদে থাকা পানির ট্যাংকিও পুড়ে গেছে। বাড়ির সকল বাথ রুমের প্লাস্টিকের শাওয়ার পুড়ে গেছে। ঘরের অনেক আসবাবপত্র কাপড়, খাটের জাজিন পুড়ে গেছে। ঘরের লাগানো এসিটিও পুড়ে গেছে।


স্কুল শিক্ষকের ভাতিজা সাকিব জানান, অলৌকিক ঘটনা থেকে উদ্ধার পেতে ঢাকার নরসিংদী থেকে মুফতি রবিউল ইসলাম নামের এক হুজুরকে নিয়ে এসেছেন। গত ২দিন ধরে তিনি কুরআনি রুকাইয়া করেও কোন সমাধান করতে পারছেন না। মুফতি রবিউল ইসলাম সমাধান করতে না পেরে আরও তিনজন হুজুরকে নিয়ে আসেছেন ওই বাড়িতে।


স্কুল শিক্ষকের এক প্রতিবেশি বলেন, ঘটনা শুনতে পেয়ে আমরা শিক্ষকের বাড়ি গিয়েছিলাম। আমাদের সামনে প্লাস্টিকের র‌্যাকে হঠাৎ আগুন জ¦লে উঠলো। তার সেটা নিভাতেই বাড়ির ছাদের ট্যাংকির মুখে আগুন জ¦লে উঠে। কোন পদার্থ দিয়ে আগুন দিতে হলে তো কাউকে না কাউকে আসতে হবে। মঙ্গলবার দুপুরে বাড়িতে লাগালো এসিটাও পুড়ে গেছে।


এবিষয়ে মুফতি রবিউল ইসলাম সাথে কথা বলা জন্য বাড়ির ভেতরে যেতে চাইতে স্কুল শিক্ষকের ছেলে জানান, বাড়ির ভেতরে যেতে হুজুর নিষেধ করেছে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram