১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম- সাহ‌সিকতা) পুরস্কার পেলেন আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান 

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
এপ্রিল ৩০, ২০২৫
69
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

সেবা, সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা, সততা ও জনগণের সেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ (সাহসিকতা) প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম)  অর্জন করেছেন  আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান। থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে সারাদেশে একমাত্র  তিনি এ বছর এই সর্বোচ্চ স্বীকৃতি অর্জন করেছেন।

 এ বছর বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছেন ৬২ জন পুলিশ কর্মকর্তা।

বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পদকপ্রাপ্তদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হয়েছে।

এবারের পদকপ্রাপ্তদের বাছাইয়ে সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করা হয়েছে। শুধুমাত্র যারা তাদের দায়িত্ব পালনকালে সাহসিকতা ও সেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তাদেরকেই এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল ২৯ এপ্রিল ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনন্স অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫-এর বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর হাতে পিপিএম সম্মাননা তুলে দেন। প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনুসের উপস্থিতিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্তরের বাছাইকৃত পুলিশ কর্মকর্তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এই সম্মান শুধু আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি আলমডাঙ্গা থানার প্রতিটি পুলিশ সদস্যের সম্মিলিত পরিশ্রমের ফল। আমি এই পুরস্কার আলমডাঙ্গার প্রতিটি মানুষের প্রতি উৎসর্গ করছি। আমি কখনো পুরস্কারের জন্য কাজ করিনি। আমার স্বপ্ন ছিল, আমার দায়িত্বের গাছ যেন কারও ছায়া হয়। আজ এই পদক আমাকে নতুন করে দায়বদ্ধ করেছে— আলমডাঙ্গার প্রতিটি মানুষের শান্তি নিশ্চিত করার জন্য।"

ওসি মাসুদুর রহমান  আলমডাঙ্গা থানায় যোগদান করেন গত বছর ১৬ অক্টোবর। 

 পর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ট্রমা দ্রুত কাটিয়ে উঠা, এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্র উদ্ধার, দ্রুততম সময়ে সকল হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার ও মোটিভ উদ্ধার, সকল ডাকাতি ঘটনার কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে আসামী গ্রেফতার,  জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারী ও শিশু সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। তাঁর নিরলস পরিশ্রম ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক করে তুলেছে।

আলমডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) আজগর আলী, এস আই কাজী শামসুল আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনসাধারণ ওসি মাসুদুর রহমানের এই সন্মান অর্জনে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন, তাঁর নেতৃত্বে এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং উন্নতির ধারায় আরও এগিয়ে যাবে।

 সহকর্মীরা জানান, কঠোর শাসন আর কোমল হৃদয়ের মিশেলে ওসি মাসুদুর রহমান  হয়ে উঠেছেন একটি আস্থার নাম। কখনো রাতের আঁধারে অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান, কখনো দুপুরের রোদে গ্রামের ভেতর ছুটে চলা— সবই তাঁর প্রতিদিনের লড়াই, আলমডাঙ্গাকে নিরাপদ রাখার জন্য।

আলমডাঙ্গা নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "বিপিএম পদকের এই দীপ্তি তাঁর কাঁধে যেমন গৌরবের ভার দিয়েছে, তেমনি নতুন করে প্রত্যাশারও জন্ম দিয়েছে মানুষের মনে।

আগামী দিনগুলোতে অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে আলমডাঙ্গা হবে আরও শান্তিপূর্ণ, আরও মানবিক এক আবাসভূমি হবে।  সর্বোচ্চ সন্মাননা প্রাপ্তির সাথে সাথে এমন প্রত্যাশা উচ্চকিত হয়েছে সকলের মনে।"

অনেকে এ প্রাপ্তিকে অতীতের সাফল্যের পদচিহ্ হিসেবে দেখছেন।

ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান  দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আলমডাঙ্গা থানায় অপরাধ দমন ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।

মাদকবিরোধী ও অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ধারাবাহিক সাফল্যের পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার, মোটিভ উদ্ধার,  ডাকাতির কয়েক ঘন্টার ভেতর ডাকাত গ্রেফতার, নারী নির্যাতন, সাইবার অপরাধ ও সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধেও তিনি গড়ে তুলেছেন দৃশ্যমান প্রতিরোধ।

(২০২১ সালে একাধিক চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য পেয়েছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) বিশেষ সম্মাননা।)

এই সব ছোট ছোট অর্জনই আজ এসে মিলেছে বিপিএম পদকের গৌরবে।

শহরবাসীর প্রত্যাশা-- পুরস্কার প্রাপ্তির সাথে মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে আলমডাঙ্গা আরও বেশি মানবিক এবং সুন্দর এক শহর হিসেবে গড়ে উঠবে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram