আলমডাঙ্গায় কাপড় চুরির অভিযোগে যুবককে কাঁঠাল গাছে বেধে নির্যাতন ভিডিও ভাইরাল

আলমডাঙ্গায় রাতের আধারে কাপড় চুরির অভিযোগে যুবককে কাঁঠাল গাছে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যুবকের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে প্রাণভিক্ষা চেয়ে রেহাই পায় যুবক। মধ্যযুগীয় কায়দার এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদি ইউনিয়নের হারদী গ্রামের খালপাড়ায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কালুকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ৩ টা থেকে ১৮ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৭ টা পর্যন্ত ওই যুবককে কাঁঠাল গাছে বেধে নির্মম নির্যাতন চালায় স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম ওসমানপুর ফাঁড়ি পুলিশের নিকট তুলে দেয় ওই যুবককে।
নির্যাতনের শিকার যুবক বজলু ফারাজী (৩৫) আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের ফারাজীপাড়ার পচা ফারাজীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, হারদি গ্রামের খালপাড়ার মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে কালু হোসেনের বাড়ি থেকে তার স্ত্রীর ব্যবহৃত একটি মেক্সি চুরি হয়ে যায়। চুরি হওয়া ওই ম্যাক্সি পরে নির্যাতনের শিকার যুবক নিজেই বিভিন্ন বাড়ির জানালা দিয়ে উকি মারে। বৃহস্পতিবার রাত ৩ টার দিকে ভুক্তভোগী কালু প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে দেখতে পান প্রতিবেশী জসিমের বসতবাড়ির জানালা দিয়ে মেক্সি পরিহিত একজন উকি দিচ্ছে। বিষয়টি গোপনে লক্ষ্য করে পিছন থেকে চোর সন্দেহে বজলুকে চেপে ধরে। তার চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে বজলুকে একটি কাঁঠাল গাছে বেধে সারারাত নির্যাতন করে।
মারপিটের একপর্যায়ে বজলুর পরণে থাকা মেক্সিতে এক ব্যক্তিকে আগুন লাগাতে দেখা যায়। এসময় বজলু প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার দিতে থাকে।
চোর সন্দেহে গাছে বেধে নির্যাতনকারীদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনার বিষয়ে হারদি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, রাতের আঁধারে চুরি করতে যাওয়া বজলু নামের একজনকে আটক করে এলাকাবাসী। তবে তাকে ধরে অনেকে মারপিট করেছে। সকাল ৬ টার দিকে তিনি জানতে পারলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফাঁড়িপুলিশকে খবর দিয়ে তাকে প্রশাসনের জিম্মায় তুলে দিয়েছি।
এলাকাবাসি জানান, হারদী খালপাড়ার কালুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুুলিশ।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাসুদুর রহমান জানান, চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক ও নির্যাতনের শিকার হওয়া যুবক বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কালু নামের একজনকে থানা নিয়ে আসা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যাচাই বাছাইপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।