আলমডাঙ্গায় পিয়াল মাহমুদ সাদ্দাম ও তার সহযোগী গ্রেফতার: আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার

ওয়ান শ্যুটার গান, দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ এলাকার অস্ত্রধারী মাদকব্যবসায়ী পিয়াল মাহমুদ ওরফে সাদ্দাম (৩২) এবং তার সহযোগী আতাউর রহমান রকিকে (৩২) পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ৭ এপ্রিল দিনগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তাদের গ্র্রেফতার করেছে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ।
পিয়াল মাহমুদ ওরফে সাদ্দাম উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের একমাত্র ছেলে ও রকি আলমডাঙ্গা বাজারের আলিফ উদ্দিন সড়কের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে।
পিয়াল মাহমুদ ওরফে সাদ্দামের নামে আলমডাঙ্গা থানায় মাদক, বিষ্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুই ডজন মামলা রয়েছে। নতুন করে পিয়াল মাহমুদ সাদ্দাম ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও ডাকাতি প্রস্তুতির ৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিকে, অস্ত্রধারী মাদকব্যবসায়ী সাদ্দাম ও তার সহযোগি রকিকে গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার করার ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের সাফল্যের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হলো।
অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের সন্তান পিয়াল মাহমুদ ওরফে সাদ্দামের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকা ও অস্ত্রবাজীর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ২০১০ সাল থেকে এসকল অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের শুরু। টপ টেরর সাদ্দামকে গ্রেফতার করতে যৌথবাহিনি, র্যাব ও পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিল। যৌথবাহিনি ও পুলিশ পৃথকভাবে তাকে গ্রেফতারের জন্য অনেকবার অভিযান চালিয়েছে। পুলিশের লাগাতার অভিযানে শেষ গতকাল রাতে নিজ গ্রামের মুরগি শেড থেকে তাকে ও রকিকে গ্রেফতার করেছে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ।
এ সময় তার নিকট থেকে ওয়ান শ্যুটার গান, একটা ছ্যানদা (রামদা), চাইনিজ কুড়াল ও ৫২ পিস মাদকদ্রব্য ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে ৩ টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান জানান, দীর্ঘদিনের নিরলস প্রচেষ্টায় এ অঞ্চলের শীর্ষ মাদকব্যবসায়ী ও অস্ত্রবাজ পিয়াল মাহমুদ ওরফে সাদ্দামকে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করেছি। সাথে তার সাগরেদ রকিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সাদ্দামের বিরুদ্ধে মাদক আইনে, নারী ও শিশু নির্যাতন, ডাকাতি, বিষ্ফোরক আইনে ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ২৪ টি মামলা রয়েছে।
যেভাবে গ্রেফতার করা হল সাদ্দামকে:
পিয়াল মাহমুদ ওরফে সাদ্দামকে গ্রেফতার করতে যৌথবাহিনি, র্যাব ও পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছিল। এমনকি মিরপুর উপজেলার কাকিলাদহ ফাঁড়ি পুলিশও তাকে গ্রেফতার করতে মরিয়া হয়ে উঠে। বেশ চালাক চতুর সাদ্দাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনির চোখ এড়িয়ে চলাচল করত। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সামান্যের জন্য একাধিকবার তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। গত কয়েকদিন আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ মরিয়া হয়ে উঠে সাদ্দামকে গ্রেফতার করতে। ঘটনার দিন কেউ কৃষক সেজে, কেউ অন্য বেশ ধরে পুলিশ সাদ্দামের মুরগি ফার্মের নিকটবর্তী ভুট্টাক্ষেতে পজিশন নিয়ে অপেক্ষারত ছিল। পুলিশ নিশ্চিত ছিল যে সাদ্দাম বাহিনি দিনশেষে এখানে ফিরে নেশা করবে। এক পর্যায়ে পুলিশ রেকি করতে করতে সাদ্দামবাহিনির মুখোমুখি হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সাদ্দাম বাহিনি সামনের গাং'র পানিতে লাফ দেন। সে সময় কৗশলে পুলিশ সাদ্দাম ও রকিকে গ্রেফতার করে। অন্যরা পালিয়ে যায়।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেন এসআই কাজী শামসুল আলম, এএসআই আশাদুল ইসলাম, এএসআই সোহেল রানা, কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম, মিলন, নাইমুল হক, সাগর, তৌহিদ, আজিজ ও রোকন।
গতকালই তাদেরকে অস্ত্র, মাদক ও ডাকাতি প্রস্তুতির ৩টি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।