দাফনের আড়াই মাস পর ঈদ করতে বাড়ি ফিরলেন আলমডাঙ্গার তুফান

দাফনের আড়াই মাস পর ঈদ করতে বাড়িতে ফিলে আসলেন আলমডাঙ্গার তোফাজ্জেল হোসেন তুফান। গত ১২ জানুয়ারি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় তুফান। নিখোঁজের কয়েকদিন পর গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল থেকে ট্রেন দূর্ঘটনায় নিহত তুফানে লাশ নিয়ে এসে দাফন করে তার বাবা-মা। ২৭ মার্চ রাতে প্রায় আড়াই মাস পর তুফান ঢাকা থেকে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরে আসে। সকাল থেকে তুফানকে দেখতে এলাকার মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমায়। এলাকাবাসি প্রশ্ন তোলেন দাফনকৃত তুফানের পরিচয় কি?
তোফাজ্জেল হোসেন তুফান(১৪) উপজেলার হারদী ইউনিয়নের বৈদ্যানাথপুর গ্রামের সাঈদ হোসেনের ছেলে।
এলাকাবাসি জানায়, গত ১২ জানুয়ারি তুফান বাড়ি থেকে রাগ করে চলে যায়। তাকে অনেক খোঁজাখুজি করে সন্ধান না পাওয়ার তার বাবা আলমডাঙ্গা থানায় নিখোঁজ জিডি করেন। নিখোঁজের দুই দিনপর ১৪ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গাইবান্ধা রেল ষ্টেশনে একটি ছেলে ট্রেন দূর্ঘটনায় আহতাস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। ছেলেটির ছবিও তুফানের মতই দেখতে। এ সংবাদ পেয়ে তুফানের বাবা সাঈদ হোসেনসহ পরিবারের লোকজন গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার ৪ দিনপর তুফান মারা যায়। তুফানের বাবাসহ পরিবারের লোকজন লাশ বাড়িতে নিয়ে দাফন করে। ২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে তুফান বাড়িতে ফিরে আসে। তার বাড়িতে ফিরে আসার কথা এলাকার মানুষ প্রথমে রহস্য মনে করলেও পরে সেটা সত্যি হয়েছে। সকাল থেকে তুফানকে দেখতে এলাকার মানুষ ভির জমায় তার বাড়িতে। সকলে প্রশ্ন করে দাফনকৃত তুফানে পরিচয় কি?।
তুফানের বাবা সাঈদ হোসেন জানান, তুফান বাড়ি থেকে হারিয়ে যাওয়ার পর তাকে না পেয়ে থাকায় জিডি করি। দুইদিন পর জানতে পারি ফেসবুকে একটি ছেলের ছবি দিয়েছে। ট্রেনের সাথে ধাক্কা লেগে হাসপাতালে ভর্তি আছে। ছবিটি দেখে তুফানের মত মনে হয়। পরিবারের সকলকে নিয়ে আমরা গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে যায়। সেখানে চারদিন চিকিৎসার পর ওই ছেলেটি মারা যায়। আমরা আমাদের ছেলে তুফান মনে করে তার লাশ নিয়ে এসে দাফন করেছি। বৃহস্পতিবার রাতে আমার ছেলে তুফান বাড়িতে ফিরে এসেছে।
তুফান জানান, তার বড় ভায়ের উপর রাগ করে বাড়ি থেকে ঢাকায় চলে যায়। ঢাকা শ্যামলিতে আলমডাঙ্গার কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়। তাদের সাথে রড মিস্ত্রেরীর কাজ করতে শুরু করি। রাগ করে এতদিন বাড়িতে যোগযোগও করিনি। দুই-তিন পর ঈদ। সবাই বাড়িতে চলে আসছে। সেজন্য আমিও বাড়িতে আসছি। বাড়িতে আসার পর জানতে পারি এ ঘটনা।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান জানান, আলমডাঙ্গার বৈদ্যনাথপুর গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন দাফনের আড়াই মাসপর বাড়িতে ফিরে এসেছে। সকালে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দাফনকৃত তুফানের পরিচয় বের করতে পুলিমের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।