আলমডাঙ্গায় তেলজাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় মাঠ দিবস ও কারিগরি আলোচনা

আলমডাঙ্গায় ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের তেলজাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় মাঠ দিবস ও কারিগরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৬ মার্চ আলমডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের আয়োজনে ডাউকি ইউনিয়নের মাজু বøকে এ মাঠ দিবস ও কারিগরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক হাসান ওয়ারিসুল কবীর। এ সময় তিনি বলেন," ভোজ্যতেলের বেশিরভাগ বিদেশ থকে আমদানি করতে হয় এবং এর পিছনে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্র্র ব্যয় হয়। দেশে তেল উৎপাদনের মূল বাধা হলো জমির স্বল্পতা। ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা উচ্চফলনশীল ও স্বল্পকালীন উন্নত জাতের ধান ও সরিষার জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর চাষ দ্রæত কৃষকের নিকট ছড়িয়ে দেওয়া ও জনপ্রিয় করতে পারলে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি না কমিয়েও অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষাসহ তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ান সম্ভব হবে। সে লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় সমন্বিত কর্মসূচি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।" স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপ জেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ রেহানা পারভীন।
তিনি বলেন,"বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে তেল জাতীয় ফসলের মধ্যে প্রধান ভূমিকা রাখে সরিষা, সেই সঙ্গে সূর্যমুখীও আংশিক। স্বাধীনতাপূর্ব দেশে উৎপাদিত সরিষার তেলই ভোজ্যতেলের সিংহভাগ চাহিদা পূরণ করত। পরবর্তী সময়ে দেশে উফশী বোরো ধানের আবাদ বাড়তে থাকায় সরিষার আবাদ কমতে থাকে। সেই সঙ্গে সরিষার তেলে বিদ্যমান ইরুসিক এসিড নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে এক ধরনের ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি করা হয়। এ সুযোগে সরিষার তেল বাদ দিয়ে মানুষ সয়াবিন তেলের দিকে বেশি মাত্রায় ঝুঁকে পড়ে। বেশি তাপমাত্রায় রান্নার জন্য সরিষার তেল উপযোগী এবং রান্নায় এ তেল কম লাগে বিধায় তেল সাশ্রয় হয়।
তিনি বলেন, দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটানোর জন্য প্রধান এ তেল ফসলটির আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি জরুরি হয়ে পড়েছে। আশার কথা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তেল ফসলের ওপর যুগোপযোগী প্রকল্প নেওয়ার ফলে বর্তমানে ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষার তেল জনপ্রিয় হচ্ছে এবং এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উচ্চফলনশীল জাত ও মানসম্মত বীজ ব্যবহার, উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ, অনাবাদি পতিত জমি চাষের আওতায় এনে এবং ক্রপিং প্যাটার্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে তেল ফসলের আবাদি এলাকা বাড়িয়ে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।"
বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায়। তিনি বলেন, "গৃহীত পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে ২০২৪-২৫ অর্থবছর নাগাদ তিন বছরে তেল আমদানির হার ৪০ দশমিক ৫৪ শতাংশ হ্রাস করা যাবে। বাদাম ও সয়াবিনের তেল নিস্কাশন সম্ভব হলে সব তেল জাতীয় ফসল থেকে ৪৮ দশমিক ২৯ শতাংশ আমদানি ব্যয় হ্রাস করা সম্ভব হবে।"
এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (উদ্যান) দেবাশীষ কুমার দাস, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উদয় রহমান। কৃষি সম্প্রসারণ কর্তকর্তা সাইফুল্লাহ মাহমুদের উপস্থাপনায় কৃষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাজলী খাতুন, হালিমা খাতুন, খালেদা খাতুন, কমেলা খাতুন, মনির উদ্দিন, আলতাফ হোসেন, রেন্টু মিয়া, ফজলুল হক, সাইদুল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি অফিসার আব্দুর রফিক, আশরাফুল আলম, জাহিদুল ইসলাম, দুলারী খাতুন, রফিকুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, নজরুল ইসলামসহ শতাধিক কৃষক ও কৃষি অফিসের অফিসার।