আলমডাঙ্গায় অস্ত্র ও হত্যা মামলার আসামী লাল চাঁদ গ্রেফতার

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের সফল অভিযানে বাপ- বেটা বাহিনির সক্রীয় সদস্য হরিনাকুন্ড থানার ত্রাস হত্যা মামলার আসামী লাল চাঁদকে গ্রেফতার করেছে। ইতোপূর্বে গত ১৬ জানুয়ারি বাপ- বেটা বাহিনির বেটা শামীম মালিথাকে একটি দেশীয় ওয়ান শুটার গান ও গুলিসহ আটক করে পুলিশ। ওই মামলার এজাহার নামীয় আসামী লাল চাঁদ। গত ২৬ জানুয়ারি রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদাহ জেলার হরিনাকুন্ড থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে পুলিশ।
গ্রেফতার লাল চাঁদ অস্ত্র মামলার এজাহার নামীয় আসামী ও ঝিলাইদহ জেলার হরিনাকুন্ড উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মিনাজ উদ্দীনের ছেলে। লাল চাঁদ হরিনাকুন্ড থানার শুড়া গ্রামের পূর্বপাড়ার গোলাম রসূল ওরফে নান্টু মিয়ার ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য কামরুজ্জামান জোয়ার্দ্দার শামীম (৫৩)হত্যা মামলার চার্জশিট ভূক্ত ১০ নং আসামী। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজি ও ডাকাতিও অভিযোগও রয়েছে।
২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ২৩ তারিখে শুড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য কামরুজ্জামান জোয়ার্দ্দার শামীমকে গ্রামের বাঁশের সাকো পার করে নিয়ে পার্বতীপুর গ্রামের একটি মেহগনি বাগানে গুলি করে হত্যা করে। পরে নিহতের স্ত্রী পাপিয়া খাতুন বাদী হয়ে হরিনাকুন্ড থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার চার্জশিট ভূক্ত ১০ আসামী লাল চাঁদ।
পুলিশ ও এলাকাসূত্রে জানা যায়, তিওরবিলা গ্রামের আলাল মালিথার ছেলে সাঈদ মালিথা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। গত ২০২০ সালে ঝিনাইদহ র্যাব-৬ তাকে অস্ত্রসহ আটক করে। সে সময় তার কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়। সেই মামলায় তিনি জেলে ছিলেন। গত কয়েক মাস পূর্বে জামিনে জেলমুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন।
এলাকায় অভিযোগ উঠে সাঈদ মালিথা বাড়ি ফিরে নিজের ছেলে শামিম মালিথাকে সাথে নিয়ে গ্যাং গ্রæপ সৃষ্টি করেন। এলাকার অনেকেই এ গ্যাং গ্রæপেকে বাপ- বেটা বাহিনি বলে মন্তব্য করতেন। এ গ্রæপে আলমডাঙ্গা ও হরিনাকন্ড এলাকার ১০/১২ যুবক জড়িত বলেও জানা যায়। চাঁদাবাজিও নানা সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে পুলিশ তাদের আটক করতে মরিয়া হয়ে উঠে। সম্প্রতি বাপ- বেটা বাহিনি পার্শ্ববর্তী রায়সা গ্রামের সিতাবিতা বিলের দুই মাছ খামারে গিয়ে চড়াও হয়। এক খামারে ২ লাখ ও অন্য একটি খামারে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাছাড়া রামদিয়া বাওড়ে গিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি করে। নৈশ্য প্রহরীদের মারধর করে। হরিনাকুন্ড ফতেপুর গ্রামের রাস্তার কাজ চাঁদার দাবীতে বন্ধ করে দেয়।
এ সংবাদ জেনে যায় পুলিশ। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে তিওরবিলা ফাঁড়ি পুলিশে এসআই সুকান্ত, আলমডাঙ্গা থানার এসআই কাজী সামসুল আলম সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স নিয়ে অভিযান শুরু করে। অভিযানের এক পর্যায়ে নিজ গ্রাম থেকেই আটক করে গ্যাং গ্রæপের শীর্ষ নেতার ছেলে শামিম মালিথাকে। এ সময় তার নিকট থেকে গুলি ও একটি দেশি ওয়ান শুটার গান উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাহিনির অন্যান্যরা পালিয়ে যায়।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই কাজী সামসুল আলম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে হরিনাকন্ডু এলাকা থেকে লাল চাঁদকে গ্রেফতার করে। তাকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান বলেন, যে কোন মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চরমপন্থী কিংবা চাঁদাবাজকে আটক করতে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।