আসাননগরে পরকীয়ার বলি অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু হত্যা মামলার আসামী শ্বশুর ও দেবর গ্রেফতার

আলমডাঙ্গার আসাননগরে পরকীয়ার বলি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে নিহতের পিতা ফরিদ আলী বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামী করে গত ১ জানুয়ারি আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার আসামি হিসেবে নিহতের শ্বশুর আলমডাঙ্গার আসাননগর গ্রামের গিয়াস উদ্দীন (৬০) ও দেবর পলাশ উদ্দীনকে (৩০) আলমডাঙ্গা থানার এসআই কাজী সামসুল আলম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে গ্রেফতার করে। পরে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে সোপর্দ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ নভেম্বর আলমডাঙ্গার আসাননগর গ্রামে ৬ মাসের অন্ত:স্বত্বা পলি খাতুনকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার। হত্যার অভিযোগ উঠে স্বয়ং স্বামী রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। স্বামীর পরকীয়ার ঘটনায় তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে ঘরের ভেতর মারধর করতে থাকে স্বামী রবিউল। শেষ বিকেলের দিকে পরিবারের সবার সামনেই রবিউল তার ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পলি খাতুনকে মারপিট করে বলে অভিযোগ উঠে। তবে রবিউলের পরিবার দাবি করেছিল মারপিট ও ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে পলি বিষের বোতল নিয়ে মুখে ঢেলে দেয়। বিষের প্রসংগ আমলে না নিয়ে হত্যা দাবি করে পলির বাপের পরিবারের সদস্যরা হইচই শুরু করলে লাশ বাড়িতে ফেলে রেখেই রবিউলের পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়।
নিহত পলি খাতুন আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ট্রাক চালক রবিউল ইসলামের স্ত্রী ও হারদী ইউনিয়নের গোপালদিয়াড় গ্রামের ফরিদউদ্দিনের মেয়ে।
গ্রাম ও পুলিশসুত্রে জানায়, রবিউল ও পলি দম্পত্তির এক মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে। রবিউল এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। সে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে ভিডিও কলে কথা বলতো। এমনকি পলির সামনেও কথা বলতো। এ নিয়ে রবিউলের সাথে পলির প্রতিনিয়তই ঝগড়াঝাটি চলতে থাকে। মঙ্গলবার বিকেলের দিকেও তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে রবিউল পলিকে ঘরের ভেতর মারপিট করতে শুরু করে। ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা পলি কান্নাকাটি করলে প্রতিবেশীরাও এগিয়ে যায়।
তখনই রবিউলের পিতা বলতে থাকেন পলি বিষ খেয়েছে।
এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে আলমডাঙ্গা থানায় অপমৃত মামলা দায়ের করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশে ১ জানুয়ারি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।