আলমডাঙ্গার রামদিয়া গ্রামে জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে একজনকে কুপিয়ে হত্যা
আলমডাঙ্গার রামদিয়া গ্রামে জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আহমেদ শরীফ ওরফে ছোট বুড়ো (৪৫) নামের এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। ২২ ডিসেম্বর রোববার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার জামজামি ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামের মাঝেরপাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত শরীফ ওরফে বুড়ো রামদিয়া গ্রামের মৃত বিশারত আলীর ছেলে। এ সময় আরও ৪/৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ সময় প্রতিপক্ষেরও কয়েকজন আহত হয়েছে।
আহতরা হলেন- একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে আব্দুল হালিম(৩৫), সেলিম (৪৫) ও সেলিমের ছেলে সোয়েব (২৩) এবং খয়বার পল্টু আহম্মেদ।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাম দিয়া গ্রামের আনসার আলী ও ফরিদ জোয়ার্দ্দার গ্রুপের সাথে একই গ্রামের পল্টু ও হালিম গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধ রয়েছে। আনসার আলী গ্রুপ বিএনপি ও পল্টু- হালিম গ্রুপের লোকজন স্থানীয়ভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
গত ৫ আগস্ট দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর ৬ আগস্ট থেকে আনসার আলী গ্রæপের লোকজন এলাকায় মহড়া দিতে থাকে। সে সময় পল্টু -হালিম গ্রুপের সাথে আনসার আলী গ্রুপের কয়েক দফা হামলা পাল্টা হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে আসছিল। এক পর্যায়ে পল্টু-হালিম গ্রুপের লোকজন বাড়ি ছাড়া ছিল। এরই এক পর্যায়ে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় আহম্মদে শরীফ ওরফে ছোট বুড়োসহ কয়েক জনকে মাঝেরপাড়ার মসজিদের সামনে পেয়ে প্রতিপক্ষ আনসার জোয়ার্দ্দার গংয়ের লোকজন আতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে শরীফ ওরফে ছোট বুড়োকে হত্যা করে। একই সময় তাদের পক্ষের পল্টু, হালিম, সেলিম ও সোয়েব আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
নিহতের বেয়াই আওলাদ হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আনসার আলী ও ফরিদ জোয়ার্দ্দার গং আমাদের উপর অত্যাচার চালিয়ে আসছে। গত ৬ আগস্ট মাঠে কাজ করা অবস্থায় আনসার আলী গ্রæপের লোকজন হালিমকে মারধর করে। পরদিন গ্রামের পল্টুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।এভাবে দফায় দফায় হামলার কারণে আমাদের লোকজন বাড়ি ছাড়া। রোববার এশার নামাজের পর আমার বিয়াই আহ্ম্মদ শরীফসহ কয়েকজনকে মসজিদের সামনে পেয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আরও ৪ জন গুরতর আহত হয়েছে।
এলাকাসূত্রে জানা যায়, গত সোয়া এক যুগ ধরে আওয়ামীলীগের শাসনামলে বিএনপি সমর্থকরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। শুধু আওয়ামী লীগের লোক নিজেরাই নির্যাতন করেনি, প্রশাসন দিয়েও নির্যাতন করিয়েছে। জমি, বাওড় ও মাছের ব্যবসা দখল করে নিয়েছিল। গত ৯ আগস্ট বিএনপি নেতা আনসার আলীর ভাতিজা মাসেম আলী কে নিহত আহমেদ গং পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে মৃতপ্রায় অবস্থায় ফেলে রাখে। ৫ আগস্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএনপি সমর্থকেরা সুবিধাজনক অবস্থায়। এই অবস্থায় গতকাল তারা সংগঠিত হয়ে প্রতিপক্ষ আহমেদকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনার বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান বলেন, রাসদিয়ায় দু'পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। রোববার এশার নামাজের পর মাঝেররপাড়া মসজিদের সামনে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একপক্ষের একজন নিহত ও ৩/৪ জন আহত হয়েছে। এসময় প্রতিপক্ষেরও কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। আসামী ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।