পিজি হাসপাতালের শিশু অনুষদের ডীন হলেন আলমডাঙ্গার সন্তান প্রফেসর ডাক্তার আতিয়ার রহমান
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমান বিএসএমএমইউ (পিজি) হাসপাতালের শিশু অনুষদের ডীন হলেন। একই সাথে তিনি শিশু ফ্যাকাল্টির পোস্ট গ্রাজুয়েশন এম ডি কোর্স ডিরেক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।
ডাক্তারের একটিমাত্র সঠিক সিদ্ধান্ত আপনার জীবন বাঁচাতে পারে, আবার ভুল সিদ্ধান্ত আপনাকে মারতেও পারে।”- অ্যারিস্টটল রিচি লেক বলেছেন, "ডাক্তাররা আমাদের বেঁচে থাকার সেই আশাটুকু দেখাতে পারে যা অন্যকেউ কখনোই পারেনা।”
অধ্যাপক ডাক্তার আতিয়ার রহমানকে স্বচোখে দেখলেই উপরোক্ত উক্তি মনে পড়ে যায়।
উপরোক্ত উক্তির সাথে তুলনা করার মত ঠিক তেমনই একজন চিকিৎসক তিনি। শ্যামল গ্রামের শান্তশিষ্ট সহজ সরল মানুষের উপমা তিনি।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমান ১৯৬৭ সালের ১২ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ছায়াঢাকা, পাখিঢাকা, শস্য শ্যামলিম শ্যামপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া এক বিরল প্রতিভার অধিকারী তিনি।
১৯৮৩ সালে আলমডাঙ্গা পাইলট বহুমুখী বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে আলমডাঙ্গা সেন্টার ফাস্ট ও স্টার মার্ক অর্জন করে অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। পরবর্তীতে আলমডাঙ্গা ডিগ্রী কলেজ থেকে আবারও সেন্টার ফাস্ট হয়ে আলমডাঙ্গা কলেজের মুখ উজ্জ্বল করেন। অতুলনীয় মেধাবী ছাত্র আতিয়ার রহমানের আশৈশব লালিত স্বপ্ন ডাক্তার হওয়ার। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ঈর্ষনীয় সাফল্যের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির স্বপ্ন তাকে বিভোর করে তোলে। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আর নিজের একাগ্র শ্রমে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। অমিত মেধার প্রাবল্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকার প্রথম দিকে স্থান করে নেন।
ঢাকা িেডক্যাল কলেজ থেকে মেধা তালিকার সন্মানজনক অবস্থান ধরে রেখে এমবিবিএস ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। তারপর ডাক্তারী পেশায় সম্পৃক্ত হতে বিসিএস (স্বাস্থ্য) দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
পরবর্তীতে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের রেজিস্ট্রার হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। সে সময়ে তিনি বিসিপিএস থেকে কৃতিত্বের সাথে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি এফসিপিএস সম্পন্ন করেন। তারপর ২০০২ সালে সরকারি চাকরি থেকে অব্যহতি দিয়ে বাংলাদেশের একমাত্র মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউ (পিজি) হাসপাতালের শিশু বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
সহকারী অধ্যাপক থাকা সময়ে আরও একটি উচ্চতর ডিগ্রী এমডি পাশ করেন। এরপর ২০১১ সালে একই বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেতে তাকে ১৩ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের রাষ্ট্রীয় পটপরিবর্তনের পর তাকে পূর্ণ প্রফেসর হিসেব পদোন্নতি দেওয়া হয়।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমান একজন শুধু ডাক্তারই নন তিনি একজন আদর্শ আন্তর্জাতিক মানের মেডিকেল শিক্ষক। তিনি সিঙ্গাপুর, ইন্ডিয়াসহ ইউরোপীয় বহু দেশ যেমন- ইতালী, জার্মানী ও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেডিকেল সেমিনারে উপস্থিত হয়ে তার লেখা বিভিন্ন আর্টিকেল ও রিসার্চ পেপার প্রেজেন্টেশন করেছেন এবং ফেলোশিপ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি বিশেষ করে (চওঈট) পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার'র উপর এবং পেডিয়াট্রিক ব্রন্কোস্কপির উপর বিদেশ থেকে উচ্চতর কোর্স সম্পন্ন করেছেন।
তিনি বর্তমানে বিএসএমএমইউ-তে অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক দায়িত্বও পালন করছেন।
প্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্রফেসর ডাক্তার আতিয়ার রহমান শিশু পালমোনলজি উয়িং'র প্রধান এবং বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান এন্ড সার্জন ( বিসিপিএস)-র একজন সিনিয়র এক্সামিনার। তিনি বর্তমানে আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন সেটি হলো শিশু অনুষদের পোস্ট গ্রাজুয়েশন রেসিডেন্সি কোর্সের ডাইরেক্টর এবং সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিশু অনুষদের ডীন।
প্রফেসর ডাক্তার আতিয়ার রহমান বাক্তিগত জীবনে একজন সফল পিতা। তাঁর দু' কন্যা। বড় কন্যা ডাক্তার নাফিসা রহমান ঐশি ইব্র্রাহিম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে ইন্টার্নি করছে। আর ছোট কন্যা নাবিলা রহমান শশি ইংল্যান্ডের স্বনামধন্য ঐতিহ্যবাহী ইউনিভার্সিটি অব গ্রীনউয়িচে কম্পিউটিং সিস্টেম এর উপর গ্রাজুয়েশন করছে।
জন মিল্টন বলেছেন, " ডিউটি টু ওয়ার্ড গড, ডিউটি টু ওয়ার্ড প্যারেন্ট এন্ড ডিউটি টু ওয়ার্ড ম্যানকাইন্ড।"
এর মধ্যে দ্বিতীয়টি পালন করলেই প্রথম দায়িত্বও পালন করা হয়ে যায়।
দ্বিতীয় কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রেও প্রফেসর ডাক্তার আতিয়ার রহমান যথেষ্ট আন্তরিক।
প্রফেসর ডাক্তার আতিয়ার রহমান তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গরীব অসহায় দু:স্থ আতুর মানুষের স্বল্পমূল্ল্যে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নিরবে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন।
এলকার মানুষের প্রতি রয়েছে তার গভীর ভালবাসা এবং উদারতা।
চিকিৎসাসংক্রান্ত বিভিন্ন ফেডারেশনের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য তিনি নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। সবসময় নিজেকে আড়ালে রাখতেই তিনি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।
এলাকার ও দেশের এই কৃতি চিকিৎসা বিজ্ঞানীর জন্য রইল প্রান ঢালা অভিনন্দন ও শুভকামনা।