আলমডাঙ্গায়র জগন্নাথপুর গ্রামে দুস্কৃতিকারীদের দেওয়া আগুনে দোকান পুড়ে ভস্মীভূত
আলমডাঙ্গা উপজেলা রেল জগন্নাথপুর গ্রামে দুস্কৃতিকারীদের দেওয়া আগুনে একটি চা ও মুদি দোকান পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। এ ঘটনায় প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছেন দোকান মালিক। ৭ ডিসেম্বর শনিবার দিনগত ভোররাতে (প্রায় ৪টার দিকে) অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ধানের বিচালি ব্যবহার করে দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভস্মিভূত দোকানটির মালিক ওই গ্রামের দিনমুজুর আজগর আলী। যিনি দীর্ঘদিন ধরে চা ও মুদি ব্যবসা করে আসছেন। সম্পতি তিনি মালয়েশিয়া গেছেন এবং তার অবর্তমানে ছেলে সাব্বির আহমেদ দোকানটি পরিচালনা করছিলেন।
কয়েকদিন ধরে অসুস্থ থাকার কারণে সাব্বির দোকানটি বন্ধ রেখেছিলেন। তবে শনিবার দিনগত ভোরে আগুন লাগার পর স্থানীয় প্রতিবেশী ঈমান আলী প্রকৃতির ডাকে বাইরে বেরিয়ে আগুনের বিষয়টি প্রথম দেখতে পান। তিনি দ্রæত পাশের দোকানদার মনোহার আলীকে তার বাড়ি থেকে ডাকেন এবং দোকান মালিক সাব্বিরের পরিবারকে খবর দেন। আগুন দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো দোকানটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনের তীব্রতায় পাশের পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির ওপর থাকা ইন্টারনেট এবং ডিস লাইনের ক্যাবলসহ কাঠেও আগুন ধরে যায়। বিদ্যুৎ অফিসে খবর দেওয়া হলে তারা দ্রæত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় দোকানের ভেতরে থাকা মালামাল থেকে তখনও ধোঁয়া বের হচ্ছিল। বিদ্যুৎ কর্মীরা এসে খুঁটির আগুন নিভিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু করেন।
গ্রামের ইলেকট্রিশিয়ান দিরাজ জানান, ভোর ৪টার দিকে আলামিন, হিল্লালসহ বেশ কয়েকজন আমার বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করেন। পরে আমার ছেলে আমাকে এসে জানায় সাব্বিরের দোকানে আগুন ধরেছে। বিদ্যুৎ অফিসে কল দিলে দ্রæত লাইন বন্ধ করে দেয়।
প্রবিবেশি যুবক আলামিন জানান: রাতে আমি উঠে ধান সিদ্ধ করছিলাম। রাত ৪টার দিকে আগুনের বিষয়টি জানতে পারি। তিনি ও হিল্লালসহ বেশ কয়েকজ দিরাজের বাড়ি গিয়ে তাকে ডেকে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করার জন্য ফোন করতে বলি।
দোকান মালিক সাব্বিরের মা সকিনা জানান, সাব্বিরের বাবা সম্প্রতি মালয়েশিয়া গেছে। সেখানে গিয়ে এখনো তেমন সুবিধা করতে পারেনি। সে যাওয়ার আগে দোকানটি সে পরিচালনা করতো। বর্তমানে আমার ছেলে সাব্বির দোকানটি পরিচালনা করে। পূর্ব শত্রæতার জের ধরে ধরে দোকানটিতে পরিকল্পিতভাবে বিচালি দিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আরও জানান, এই দোকানের উপরে বর্তমানে তাদের সংসার নির্ভর করে।
প্রতিবেশীরা আশঙ্কা করছেন, এটি পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগ হতে পারে। তবে কারা এবং কী কারণে এ কাজ করেছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। দোকানের ভেতরে থাকা দুটি গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস না থাকায় বিস্ফোরণ হয়নি। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুনে আশপাশে থাকা বাড়ি ঘরেও ক্ষয়ক্ষতি হতো। স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি সুষ্ঠু তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
এ ঘটনার পর দোকান মালিকের পরিবার এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।