আলমডাঙ্গায় জনাকীর্ণ মাহফিলে ওয়াজ করে গেলেন জনপ্রিয় ইসলামি স্কলার মুফতি আমির হামজা
দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর পর মুফতি আমির হামজাকে স্বচোক্ষে দেখতে ও ওয়াজ শুনতে আলমডাঙ্গায় ধর্মানুরাগী মানুষের অভূতপূর্ব ঢল লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে মাহফিল শুরু হলেও বাদ আছর মুফতি আমির হামজা ওয়াজ শুরু করেন। মাগরিবের ওয়াক্তের পূর্ব পর্যন্ত তিনি ওয়াজ অব্যাহত রাখেন।
আলমডাঙ্গা এলাকায় মুফতি আমিত হামজা অত্যন্ত জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা। অনেকের সাথে রয়েছে ব্যক্তিগত সম্পর্কের সুদৃঢ় বন্ধন।
দুপুরের ভেতর দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষের আগমনে আলমডাঙ্গা শহর সরগরম হয়ে উঠে। এদের মধ্যে ধর্মানুরাগী মহিলাদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মত। দারুস সালাম প্রাঙ্গন, আলমডাঙ্গা আলিম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ হয়ে কলেজ অবধি মহিলাদের ভীড় ছিল লক্ষ্যনীয়।
ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে গত ২০২১ সালের ২৪ মে আমির হামজাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি টিম। তার নামে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। নেওয়া হয় পাঁচ দিনের রিমান্ডেও। অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় জেলখানায় কাটিয়ে গত ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর জেল থেকে মুক্ত হন তিনি।
জেলমুক্ত হওয়ার পর আলমডাঙ্গা এলাকায় এটাই ছিল মুফতি আমির হামজার প্রথম মাহফিল। সে কারণে উপস্থিতির আধিক্য ছিল লক্ষ্যনীয়।
আল আমিন সোসাইটি হাফিজিয়া মাদ্র্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্র্ডিংয়ের আয়োজিত এ মাহফিলে প্রধান তাফসীরকারক ছিলেন মুফতি আমির হামজা। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমীর মোঃ রুহুল আমীন, ২য় বক্তা ছিলেন চুয়াডাঙ্গার মাওঃ হোসাইন আহ্মাদ মাহ্ফুজ। মাহফিলে জেলা আইন আদালত বিষয়ক সম্পাদক দারুস সালামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন জেলা সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, সহকারি সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল, যুব ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক শেখ নুর মোহম্মদ হোসাইন টিপু, গাংনী আসমানখালি থানা আমির আব্বাস উদ্দিন, দামুড়হুদা থানা আমির নায়েব আলী, আলমডাঙ্গা উপজেলা আমির শফিউল আলম বকুল, আলমডাঙ্গা পৌর আমির মাহের আলী, উপজেলা নায়েবে আমির ইউসুফ আলী, উপজেলা সেক্রেটারি মুহা. মামুন রেজা, পৌর সেক্রেটারি মুসলিম উদ্দিন, অফিস সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক বিলাল হোসাইনসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন আমির, সেক্রেটারি, উপজেলা ও পৌর শিবিরের সভাপতি সম্পাদক এবং দায়িত্বশীলগণ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর পূর্বে ৮ ডিসেম্বর আলমডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত আমির হামজার মাহফিল পুলিশ প্রশাসন নস্যাৎ করে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষুদ্ধ মুসল্লিরা সে সময় নানা শ্লোগান দিতে দিতে মাহফিলস্থল ত্যাগ করেছিলেন। কুমারী, হারদী, হাটবোয়ালিয়া, গাংনী এলাকার মুসল্লিরা যাওয়ার সময় শহরের সদ্য স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরা ইট পাটকেল ছুড়ে ভেঙ্গে ফেলে। চারতলা মোড়ের ক্যামেরা ভাঙ্গতে গিয়ে কিছু ইটপাটকেল মন্দিরের ভেতর পড়ে।
এ ঘটনায় মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল। পরে অবশ্য হিন্দু সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল অনেকেই ঘটনা বুঝতে পারেন। তারা না চাইলেও কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। মতলববাজ পুলিশ প্রশাসন জামায়াত নেতাকর্মীদের উপর অর্থলোলুপ হায়েনার মত ঝাপিয়ে পড়ে। কুমারী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার জামায়াত নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বাণিজ্য শুরু হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।