১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
নভেম্বর ২৯, ২০২৪
56
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

আলমডাঙ্গায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে এক হৃদয়স্পর্শী স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত সভা হয়।

স্মরণসভা শুরুর আগে ওই সময়ের আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকার ও তাদের সমর্থিত বাহিনীর নির্মম হামলার ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। এ ভিডিও দেখে উপস্থিত সকলে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেহেদী ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভীন, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান, জেলা জামায়াতের আইন বিষয়ক সম্পাদক দারুস সালাম, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আক্তার হোসেন জোয়ার্দ্দার, পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, উপজেলা জামায়াতের আমির প্রভাষক শফিউল আলম বকুল এবং গণঅভ্যুত্থানের শহীদ প্রকৌশলী মাসুদ রানার পরিবারসহ আন্দোলনের অন্যান্য আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাসুদ রানার পরিবার, আহত শিক্ষার্থী ও তাঁদের স্বজনরা স্মরণসভায় অংশ নেন। বিশেষত শহীদ মাসুদের পিতা আব্দুর রায়হান বিশ্বাস, মা জাহানারা খাতুন, স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস সাফা এবং তিন বছরের মেয়ে আরোবি ফেরদৌস সভায় আবেগঘন পরিবেশ তৈরি করেন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আহত ও তাদের পরিবার বর্গ এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধির মধ্যে আরাফাত, আবু মাসুদ, পারভেজ, আহত আসিফ আলীর পিতা হাবিবুর রহমান মহন, হামিদুল ইসলাম, জিহাদ, ওবাইদুল্লাহ, মশিউর রহমান, শফিউল ইসলাম, হারুন অর রশিদ, ইয়াকুব, হামজা, রাজু আহমেদ, লিখন আলী, মেহেদী হাসান আসিফ, সলিমিন হোসেন, মাহফুজ হোসেন, সাই সানিক প্রমুখ।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে আলমডাঙ্গার এটিম মাঠে সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিক্ষার্থীরা পৌরসভার সামনে জড়ো হতে থাকলে, স্বৈরাচারী সরকারের সমর্থিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বাহিনীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এই বর্বর হামলায় ৪৭ জন আহত হন, যার মধ্যে ১৯ জন গুরুতরভাবে আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান ও হারদী ইউপি চেয়ারম্যান নিজে দাড়িয়ে থেকে তাদেরকে মারধর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়।

হামলার পর শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার অভাবে পালিয়ে থাকতে বাধ্য হয়। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। তবুও, হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তৎকালীন থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ গণি মিয়া মামলার এজাহারে গুরুত্ব দেননি। তিনি অপরাধীদের গ্রেফতারও করেননি।

স্মরণসভায় বক্তারা হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রæত গ্রেফতারের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, "যারা এ বর্বর হামলা চালিয়েছে এবং যারা এর নেপথ্যে রয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।"
স্মরণসভার শেষে আহতদের রোগমুক্তি ও শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram