১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর পর আলমডাঙ্গায় ওয়াজ মাহফিল করলেন মুফতি আমির হামজা

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
নভেম্বর ২৮, ২০২৪
84
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

রহমান মুকুল: দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর পর আলমডাঙ্গায় ওয়াজ মাহফিল করলেন মুফতি আমির হামজা। ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর পর আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ মাঠে এ প্রতিক্ষিত ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর পূর্বে ৮ ডিসেম্বর আলমডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত আমির হামজার মাহফিল পুলিশ প্রশাসন নস্যাৎ করে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষুদ্ধ মুসল্লিরা নানা শ্লোগান দিতে দিতে মাহফিলস্থল ত্যাগ করেছিলেন। কুমারী, হারদী, হাটবোয়ালিয়া, গাংনী এলাকার মুসল্লিরা যাওয়ার সময় শহরের সদ্য স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরা ইট পাটকেল ছুড়ে ভেঙ্গে ফেলে। চারতলা মোড়ের ক্যামেরা ভাঙ্গতে গিয়ে কিছু ইটপাটকেল মন্দিরের ভেতর পড়ে।

এ ঘটনায় মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়েছিল। পরে অবশ্য হিন্দু সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল অনেকেই ঘটনা বুঝতে পারেন। তারা না চাইলেও কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। মতলববাজ পুলিশ জামায়াত নেতাকর্মীদের উপর অর্থলোলুপ হায়েনার মত ঝাপিয়ে পড়ে। কুমারী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার জামায়াত নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বাণিজ্য শুরু হয়। কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

কিন্তু কী ঘটেছিল সে সময় মুফতি আমির হামজার সাথে?

ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে গত ২০২১ সালের ২৪ মে আমির হামজাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি টিম। তার নামে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। নেওয়া হয় পাঁচ দিনের রিমান্ডেও। অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় জেলখানায় কাটিয়ে গত ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর জেল থেকে মুক্ত হন তিনি।

‘আমির হামজা জিহাদের নামে পবিত্র কোরআন শরীফ ও হাদিসের অপব্যাখ্যা করে উগ্রবাদী বয়ানে যুব সমাজকে উগ্রবাদে ইন্ধন দেয় ও উদ্বুদ্ধ করে। এছাড়াও তার এই বয়ানের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে উগ্রবাদের প্রচার ও প্রসারে লিপ্ত হয়েছে।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক কাজী মিজানুর রহমান রিমান্ডের আবেদন এসব কথা উল্লেখ করেন।


গ্রেফতারের পর রিমান্ডের আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘মামলার এজাহারনামীয় আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল আল ইসলামের সংগঠনের সদস্য সাকিবসহ অন্যান্য কর্মীদের আমির হামজার বক্তৃতার মাধ্যমে উগ্রবাদ উদ্বুদ্ধ করেছে। ওই হামলার পেছনে তার বক্তব্য ইন্ধন প্রদর্শন করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। আমির হামজা কথিত উগ্রবাদী বক্তব্য ইউটিউবে দেখে পূর্বে গ্রেফতার হওয়া আসামি সাকিব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করে। পুলিশের গুলিতে শহীদ হবে মর্মে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।

সে তথাকথিত জিহাদের নামে পবিত্র কোরআন শরীফ ও হাদিসের অপব্যাখ্যা করে উগ্রবাদী বয়ান যুব সমাজকে উগ্রবাদে ইন্ধন দেয় ও উদ্ধুদ্ধ করে। এছাড়াও তার এই উগ্রবাদী বয়ানের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে উগ্রবাদের প্রচার ও প্রসারে লিপ্ত হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য পলাতক আসামিদের খুঁজে বের করতে এ আসামিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।’

এমন অভিযোগ তুলে মুফতি আমির হামজাকে ওই বছর ২৪ মে দুপুরে কুষ্টিয়ায় অভিযান চালিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর ২৫ মে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজাকে। একই সঙ্গে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে তৎকালীন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। সেই মামলায় সাড়ে তিন বছর কারাভোগের পর গত ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর মুক্তি পান তিনি।

মুক্তির পরও মুফতি আমির হামজাকে মাহফিলে ওয়াজ করতে বাধা দেওয়া হয়। এ বছর ১২ ফেব্রæয়ারি লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। নানা নাটকের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও এমপির প্রযতেœ জেলা প্রশাসক পরদিন অনুমতি দেন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram