জামজামী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে এন্তার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
আলমডাঙ্গার জামজামী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি স্কুল টাকায় কেনা জমি স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রি, শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে টাকা আত্মসাৎ, অন্যায় অনিয়মের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করে রাখা, টোটন জোয়ার্দ্দারকে সভাপতি করে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকবৃন্দ ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গায় এসে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষরা এসকল অভিযোগ তোলেন।
এ সময় শিক্ষকরা অভিযোগ তুলে জানান, ১৯৯৯ সালে আলমডাঙ্গার জামজামী গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানের জন্ম লগ্ন থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মহিবুল ইসলাম। স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করার সময় গ্রামের শাহাদৎ হোসেন মন্টু ৪২ শতক ও মঙ্গল নামের একজন ৩০ শতক জমি দান করেন। পরবর্তীতে স্কুলের টাকায় নবিরন নেছা নামের এক মহিলার নিকট থেকে আরও ৩২ শতক জমি ক্রয় করা হয়। ওই জমি ক্রয় করার সময় জমিটি প্রধান শিক্ষক মহিবুল ইসলাম কৌশলে তার স্ত্রী জেসমিন আরার নামে রেজিস্ট্রি করেন। কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠানে কলেজ খোলা হয়েছে। কলেজ খোলার সময় মহিবুল ইসলাম তার স্ত্রীকে দিয়ে জমিটি কলেজের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন দাতা হিসেবে।
প্রতিষ্ঠানের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রফি উদ্দিন জানান, তার ভাগ্নে হবি থানার গাংদী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের চাকুরীর জন্য অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলামের নিকট চারজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেন। এছাড়াও দুই দফায় রফিউদ্দিন আরও ১ লাখ ৫ হাজার টাকা দেন। ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে চাকুরী দেননি। অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলামের নিকট টাকা চাইতে গেলে তিনি আওয়ামীলীগের ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন।
শিক্ষকরা জানান, অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম গত ১৬ বছর ধরে দলীয় ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে তার তেলবাজ অনুসারী শিক্ষকদের সাথে নিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি করে প্রতিষ্ঠান চালাতেন। অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম আওয়ামীলীগের ক্ষমতাধারী লোকদের সভাপতি বানিয়ে কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। তিনি চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছেলুন জোয়ার্দ্দারের ভাই রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনকেও সভাপতি বানান। তাকে সাথে নিয়ে মেতে উঠেন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বাণিজ্যে। কয়েক বছরে শুধু নিয়োগ বাণিজ্য করেই প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেন অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম। দীর্ঘ বছর ধরে প্রতিষ্ঠান থেকে কোন টাকা শিক্ষকদের দেননি, এমনকি শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে নেওয়া উপবৃত্তির টিউশন ফ্রির টাকাও আত্মসাৎ করেন তিনি।
শিক্ষকরা আরও জানান, তার বিরুদ্ধাচারণ করায় বেশ কয়েকজন শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে রেখে হয়রানি করেন।
শিক্ষক আরমান আলী জানান, অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম তার দাড়ি ছিড়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়াসহ প্রতিষ্ঠানের বেশকিছু শিক্ষককে মামলার ভয় দেখান প্রায়।
এসকল অভিযোগ তুলে শিক্ষকরা অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলামের অপসারণ দাবী করেন।
এ দিকে, এসকল অভিযোগ সম্পর্কে অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম জানান, তার নামে শিক্ষকরা যে সকল অভিযোগ তুলেছেন তা সঠিক নয়। তিনি এসকল কাজের সাথে জড়িত নন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক মহিনুর রহমান, জহুরুল ইসলাম, ছানোয়ার হোসেন, আরমান আলী, জিন্নাত আলী, হেকিম আলী, শরিফুল ইসলাম, ইমাদুল হক, আবুল কাশেম, সাবেক সদস্য রফি উদ্দিন।