আলমডাঙ্গার জামজামি চাঁদার টাকাসহ হাতে নাতে দু' চাঁদাবাজকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিল জনতা

আলমডাঙ্গার জামজামিতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাইয়ের অবিশ্বাস্য ষড়যন্ত্র। হাতে নাতে দু' চাঁদাবাজকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিল জনতা।
জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি গ্রামের মৃত মহাদেব সাহার ছোট ছেলে উদয় কুমার সাহা। উদয় কুমার সাহা জামজামি বাজারের সচ্ছল মুদী ব্যবসায়ী। গত ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে উদয় সাহার দোকানে দাবীকৃত চাঁদার টাকা নিতে যায় তালহা জুবায়ের (২১) ও বিপুল হোসের মিঠু (২০) নামের দু'যুবক। জুবায়ের পার্শ্ববর্তী ইবি থানার কন্দর্পদিয়ার আলমঙ্গীর হোসেনের ছেলে ও মিঠু একই থানার পাশের গ্রাম মনোহরদিয়ার নুরুল ইসলামের ছেলে।
তারা ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে উদয় সাহাকে নানা হুমকিধামকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ভয় পেয়ে উদয় সাহা তাদেরকে ২ লাখ টাকা দিতে রাজি হন এবং ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দেন। টাকা হাতে নিয়ে চলে যাওয়ার সময় উদয় সাহা চেঁচিয়ে আশপাশের ব্যবসায়ীদের ঘটনাটি জানিয়ে দেন। আশপাশের ব্যবসায়ীরা দ্রæত মোটরসাইকেলসহ দু চাঁদাবাজকে আটক করেন। তাদের নিকট থেকে আদায়কৃত চাঁদার পঞ্চাশ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়। পরে জনতা চাঁদাবাজদ্বয়কে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ বিষয়ে উদয় সাহা বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত এজাহার করেছেন।
এলাকা ও এজাহারসূত্রে জানা যায়, উদয় সাহার বড় ভাই বিজয় সাহা উত্তরাধিকারসূত্রের কয়েক কোটি টাকার জমি ছোট ভাইকে ঠকিয়ে আত্মসাৎ করেন। এই নিয়ে দুভাইয়ের দ্ব›দ্ব চলে আসছিল। পৈত্রিক জমি থেকে বঞ্চিত হলেও উদয় সাহার ব্যবসা ছিল ভালো। নগদ অর্থের মালিক তিনি। নিজের শিশুপুত্র দিব্য'র স্কুলে যাতায়াতের জন্য দু বছর আগে উদয় সাহা মাইক্রোবাস কেনেন। ওই মাইক্রোবাসের চালক ছিলেন আটককৃত চাঁদাবাজ তালহা জুবায়ের। বিজয় সাহা মাইক্রোড্রাইভার জুবায়েরকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ছোট ভাইয়ের একমাত্র শিশুপুত্রকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে। এ জলদগম্ভীর ষড়যন্ত্র এক সময় জেনে যায় উদয় সাহা।
তিনি মাইক্রোড্রাইভারকে তাড়িয়ে দেন। কিন্তু ড্রাইভারকে তাড়িয়ে দেওয়ার আগে ক্ষোভে দু:খে উদয় সাহা বড় ভাইকে শায়েস্তা করার কথা চেচিয়ে চেচিয়ে বলেন। সে সময় সে কথা মোবাইলফোনে রেকর্ড করে নেন দুরন্ধর ড্রাইভার জুবায়ের। চাকরি হারানোর পর জুবায়ের রেকর্ডকৃত অডিও তুলে দেন বিজয় কুমারের হাতে। রেকর্ডকৃত অডিও বার্তাটি হয়ে উঠে বিজয় সাহার মোক্ষম হাতিয়ার। তিনি সেটি তিনি প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করে ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন।
এ মামলার সাক্ষী তালহা জুবায়ের স্বয়ং। এ দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দফায় দফায় উদয় সাহার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো জুবায়ের। জুবায়ের যদি ঠিকমতো সাক্ষ্য দেয় তাহলে উদয়ের নির্ঘাত ১০ বছরের জেল হবে -- এমন ভীতি দেখাতো। সম্প্রতি জুয়াবের ১৫ দিন ধরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছিল। দাবীকৃত টাকা নিতে যাওয়ায় কাল হলো।