আলমডাঙ্গায় শিক্ষা ব্যবসায়ী ভুমিদস্যু জাকারিয়া হিরোর বিরুদ্ধে মশাল মিছিল
আলমডাঙ্গার শিক্ষা ব্যবসায়ী ভুমিদস্যু জাকারিয়া হিরোর কবল থেকে আলমডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহীও সার্বজনীন প্রতিষ্ঠান 'আলমডাঙ্গা ব্যায়ামাগার' উদ্ধারে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যার পর শহীদ মিনার চত্তর থেকে মশাল মিছিলটি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে হাই রোডের আলিফ উদ্দীন মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মশাল মিছিলের শ্লোগানে শ্লোগানে শহর প্রকম্পিত হয়ে উঠে। সমাবেশে ভুমিখেকো হিরোর রাহুগ্রাস থেকে আলমডাঙ্গার সার্বজনীন ব্যায়ামাগার পুনরুদ্ধার করতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বক্তারা।
প্রায় ৪৪ বছর আগে আলমডাঙ্গার ব্যায়ামাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই সময় থেকে আলমডাঙ্গার ঐতিহ্য বহন করে আসছিল এ ব্যায়ামাগার। খুলনা বিভাগে ক্রীড়া জগতে অনন্য সংগঠন হয়ে উঠেছিল আলমডাঙ্গা ব্যায়ামাগার। আলমডাঙ্গা ব্যায়ামাগারের সদস্যরা ইতোপূর্বে খুলনা বিভাগের হয়ে ৬ বার স্বর্ণপদক অর্জন করেছে। ১৯৮৫ সালে ব্যায়ামারের নামে জমি রেজিষ্ট্রি করা হয়। ক্রয়কৃত জমিতে একতলা পাকা বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়। নির্মাণে একাধিকবার সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ভূমিদস্যু হিরো আওয়ামীলীগের কিছু নেতা ও প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ব্যায়ামাগার আত্মসাৎ করেছে। বিল্ডিং ভেঙ্গে ফেলেছে। সেখানে ৬ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। ৪ লক্ষাধিক টাকার গাছ বিক্রি করে নিয়েছে। আলমডাঙ্গা কেন্দ্রিক ভূমিদস্যু চক্রের এক মহুরী ও এক কূচক্রী উকিল এই চক্রে জড়িত বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
আলমডাঙ্গা ব্যায়ামাগার আলমডাঙ্গাবাসীর সার্বজনীন সম্পদ ও গর্ব দাবি করে ব্যায়ামাগার পূণরুদ্ধারে বক্তারা প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেছেন। প্রশাসন সদর্থক পদক্ষেপ না নিলে আলমডাঙ্গাবাসী তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠান পূণরুদ্ধার নিজেরাই করে ছাড়বে। তারা যে কোন মূল্যে অবৈধ দখলদার ভূমিদস্যুর নিকট থেকে ব্যায়ামাগার উদ্ধারের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মশাল মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা ব্যায়ামাগারের জমি উদ্ধার কমিটির আহবায়ক ইকবাল হোসেন, ব্যায়ামাগারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মহিউদ্দিন, এরশাদপুর একাডেমির প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক শামীম, ব্যায়ামাগারের জমি উদ্ধার কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক ও ব্যায়ামাগার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রহমান মুকুল, অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হাজী খোঃ এ কে. আজাদ, যুগ্ন আহ্বায়ক হাবিবুল করিম চলচল, এমদাদ হোসেন, মঞ্জু রশীদ, জেলা যুবদলের সহসভাপতি মাগরিবুর রহমান, সাহিত্যিক পিন্টুর রহমান, সাবেক যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম, প্রভাষক খাইরুল ইসলাম, বাবলুর রহমান, আনিসুর রহমান নাসিম মিয়া, রতন কুমার সাহা, বিএনপি নেতা রেজাউল হক, খন্দকার হাসিব, কামরুল, ব্যায়ামাগারের সদস্য খন্দকার রকিবুল ইসলাম রিয়েল, খন্দকার রাজিব, ব্যায়ামাগারের প্রতিষ্ঠাতা ইসলাম খানের ছেলে আব্রাহাম খান ডন, সাদ্দাম খান, সুলতানুল আরেফিন তাইফু, সোহাগ, তন্ময়, কামরুজ্জামান হিমেল, সহ কয়েক শতাধিক ছাত্র-জনতা।
বক্তারা আরও বলেন, আলমডাঙ্গা শহরের ভুমিদস্যু নামে পরিচিত মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া থেকে উঠে আসা জাকারিয়া ইসলাম হিরো। ৪৪ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত আলমডাঙ্গা ব্যায়ামাগারের জমিটি হিরো ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে দখল করে নেয়। তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের এমপি ও আলমডাঙ্গার কিছু দালালদের মাধ্যমে তিনি এ জমি দখল করেছেন। শুধু ব্যায়ামাগারই নয় জাকারিয়া ইসলাম হিরো দখল করেছিল আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের জমি, আলমডাঙ্গা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জমি। আলমডাঙ্গাবাসী রুখে দাড়ানোর কারণে সরকারি কলেজ ও শহীদ মিনারের জমি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে হিরো। হিরো আলমডাঙ্গার অ্যাডভোকেট রঞ্জিত কুমার, কৃষ্ণ নামের একজনসহ কয়েকজন দালালের মাধ্যমে ব্যায়ামাগারের জমি দখল করে নেয়।