আমেরিকার সিনিয়র ঔষধ প্রযুক্তি বিজ্ঞানী ড.মাসুদের সাফল্যের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত
ড. মাসুদ পারভেজ চুয়াডাঙ্গা - আলমডাঙ্গার সন্তান। বাদেমাজু গ্রামের প্রয়াত আয়ুব আলীর ছেলে, যিনি বর্তমানে আমেরিকার একটি বৃহৎ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে সিনিয়র ঔষধ প্রযুক্তি বিজ্ঞানী ও টিম প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।
সম্প্রতি তিনি ফার্মাকো ডায়নামিকস এবং ড্রাগ মেটাবলিজম কমিউনিটির চেয়ারম্যান হিসাবে ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। এটি ১২০০ জনের ও বেশী বিজ্ঞানী নিয়ে গঠিত একটি বিভাগ এবং AAPS-তে সারাবিশ্ব থেকে সর্বমোট ৬২ হাজার বিজ্ঞানী ও ছাত্রছাত্রী সদস্য আছে। AAPS – এ মেডিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল ফিল্ডের গবেষণা কাজের ভিত্তিতে সর্বমোট ৩২ টা আলাদা সোসাইটি আছে। এই কমিটিতে ৬৪ জন চেয়ার ও ভাইস চেয়ার দায়িত্ব পালন করে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ দিনব্যাপী বিজ্ঞানীদের ওই কনফারেন্সটি আমেরিকার সৌন্দর্যের লীলাভূমি হাওয়াই এর হনুলুলু'তে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ড. মাসুদকে লেখা অভিনন্দনপত্রে AAPS মেম্বারশীপ বোর্ড ডিরেক্টর উল্লেখ করেন "অনেক অভিজ্ঞ ও স্ট্রং ক্যান্ডিডেটদের মধ্যে থেকে অতীতের লিডারশীপ অভিজ্ঞতা, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা, বাৎসরিক সায়েন্টিফিক কনফারেন্স আয়োজন, ছাত্রছাত্রী ও বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ আয়োজন বিবেচনায় নিয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে আপনাকে নিয়োগ দেয়া হলো।"
বিজ্ঞানী কমিটিতে এই লিডারশীপ টিম বোর্ড অফ ডিরেক্টরসদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। ড. মাসুদ বলেন, সায়েন্টিফিক সোসাইটিতে এ ধরণের নেতৃত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ও বৈশ্বিক বিজ্ঞানী সমাজে পরিচিতি পাওয়ার ক্ষেত্রে। এ ধরণের সায়েন্টিফিক সোসাইটি লিডারশিপ একটি অবৈতনিক দায়িত্ব কিন্তু এই লিডারশীপ পদায়ন প্রতিটা মানুষকে তার গবেষণা ও ঔষধ সেক্টরে অবদানের স্বীকৃতি ও সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়াও এসব পজিশনের মাধ্যমে সারাবিশ্বের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী, অধ্যাপক ও ছাত্রছাত্রীদের সাথে নিয়োমিত মাসিক মিটিং'র মাধ্যমে গবেষণা, আলোচনা ও কাজের সুযোগ তৈরী হয়।"
ড. মাসুদ ইতোপূর্বে বিভিন্ন শিক্ষা ও বিজ্ঞানী সোসাইটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যেমন -- দক্ষিণ কোরিয়াতে বাংলদেশী ছাত্রছাত্রীদের সমিতির প্রেসিডেন্ট ও শেষে উপদেষ্টা, কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ হাজারের বেশী পোস্টডক্টরাল ফেলো সোসাইটির সদস্য সচিব, ওয়াসিংটন ষ্টেট ইউনিভার্সিটির AAPS চ্যাপ্টারের ছাত্র উপদেষ্টা এবং বর্তমান কর্মস্থলের এশিয়ান লিডারশিপ নেটওয়ার্ক'র চেয়ারম্যান, মাসিক বিজ্ঞান ক্লাবের প্রধান, বিশ্বের বৃহত্তম ২৩ টি ফার্মা ইন্ডাস্ট্রি বিজ্ঞানীদের নিয়ে গঠিত ফার্মাকোকাইনেটিক মডেলিং এন্ড সিমুলেশন ওয়ার্কিং গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন।
তরুণ বয়সে কীভাবে তিনি বিশ্বের এত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মাসুদ বলেন, "এসব লিডারশীপ দায়িত্বে যেতে হলে কমিউনিটিতে মানসম্মত গবেষণা, শিক্ষকতা বা গবেষণা প্রদান ও যোগাযোগ এর দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"
ড. মাসুদ এই পদে থেকে বাংলাদেশী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদেরকে অঅচঝ এর মাধ্যমে গবেষণা ও চাকুরী প্রাপ্তিতে প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরিতে সহায়তা করবেন বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একজন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী হিসেবে ড. মাসুদ এই পজিশনের জন্য নির্বাচিত হয়ে নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান বলে মন্তব্য করেন ও বাংলাদেশী বিজ্ঞানী -কর্মজীবীরা বেশী বেশী এসব নেতৃত্বে আশার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, ড. মাসুদ বর্তমানে আমেরিকার প্রশিদ্ধ ফার্মেসাটিক্যাল কোম্পানীতে যোগদানের পূর্বে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনজে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল কলেজে ফার্মেকোলোজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক (গবেষণা) ও ওয়াশিংটন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগের গবেষণা ফ্যাকাল্টি হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ড.মাসুদ এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মকান্ডে সাগ্রহে অংশ নেন। উত্তরোত্তর পেশাগত সাফল্যের জন্য তিনি এলাকাবাসীর নিকট দু-আ ও শুভকামনা প্রত্যাশা করেছেন।